সিটি প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম :
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মানোন্নয়নে অবকাঠামো নির্মাণ, শিক্ষার্থীদের জন্য কাউন্সেলিং কার্যক্রম চালু এবং যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান খারাপ ফলাফল করছে সেগুলোর শিক্ষকদের সাথে সভা করার ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত ৪৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের বার্ষিক পরীক্ষার অনলাইনে ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সাথে মত বিনিময় সভা চসিক পাবলিক লাইব্রেরী’র সম্মেলন কক্ষ, লালদিঘীতে অনুষ্ঠিত হয়। এ কার্যক্রমের ফলে শিক্ষার্থীরা eduonlineresult.com ঠিকানায় গিয়ে ইউজার আইডি দিয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বা অনলাইনে ফলাফল জানতে পারবেন। ইউজার আইডির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক ফলাফল দেখতে পারবেন।
সভায় মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মানোন্নয়নে অবকাঠামো নির্মাণ, শিক্ষার্থীদের জন্য কাউন্সেলিং কার্যক্রম এবং যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান খারাপ ফলাফল করছে সেগুলোর শিক্ষকদের সাথে সভা করব।
মেয়র কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুর্বল ফলাফল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং সমস্যার কারণ চিহ্নিত করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানান। তিনি বলেন, “আমরা শিক্ষকদের সাথে পৃথকভাবে বসে এই সমস্যাগুলো সমাধানের পথ খুঁজবো এবং আগামী বছর ফলাফল ভালো করতে সক্ষম হবো।” শিক্ষকদের ভূমিকাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “একজন শিক্ষক তখনই সার্থক হন, যখন তার ছাত্র বড় কোনো পদে উন্নীত হয় এবং সম্মানের সাথে তার নাম উচ্চারণ করে।”
কিশোর গ্যাং এবং ছাত্রদের মনোভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মেয়র বলেন, “ছাত্রদের সঠিক পথে রাখার জন্য সাইকোলজিস্ট এবং চাইল্ড স্পেশালিস্টদের সেবা প্রয়োজন। আমরা প্রতিটি স্কুলে সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলিংয়ের পরিকল্পনা করছি।” এছাড়া তিনি খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং বলেন, “৪১টি ওয়ার্ডে ৪১টি খেলার মাঠ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খেলাধুলা ছাড়া শারীরিক ও মানসিক উন্নয়ন অসম্ভব।”
মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের পর তিনি দেখতে পেয়েছেন, কিছু প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত উন্নত হলেও প্রচারের অভাবে সেখানে ছাত্র সংখ্যা কম। এ বিষয়ে তিনি প্রচারণার ব্যবস্থা করার পরিকল্পনার কথা জানান। একইসাথে তিনি জানান, শহরের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন এবং অবকাঠামোগত সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।
শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে মেয়র বলেন, “শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড এবং এটি নিশ্চিত করা আমাদের মৌলিক দায়িত্ব।” তিনি জানান, শিক্ষায় বিনিয়োগ শুধুমাত্র অর্থ ব্যয় নয় বরং এটি মৌলিক অধিকার রক্ষার একটি অঙ্গীকার। শিক্ষা খাতে বাজেট বৃদ্ধি এবং উন্নত অবকাঠামো নিশ্চিত করার জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে উন্নত পরিবেশে পরিণত করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
“আমরা প্রতিটি স্কুলকে এমনভাবে সাজাবো যাতে সেগুলো শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।” অপর্ণাচরণ স্কুলের উন্নয়ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, সেখানে একটি থ্রিডি ভিশনের ভিত্তিতে বাগান, পরিষ্কার পরিবেশ এবং টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন সব স্কুলে এ ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তারসহ চসিকের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা।