মানব সময় ডেস্ক :
বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর কেন্দ্রীয় এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেছেন, তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা অত্যন্ত জঘন্য এবং নিন্দনীয় অপরাধ। একটি গোষ্ঠী পতিত স্বৈরাচারের পক্ষ নিয়ে বাংলাদেশকে অস্থির করার জন্য ক্রমাগতভাবে দুরভিসন্ধি ও অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অস্থির করে তুলতে চায়। দেশপ্রেমিক জনগণ তাদের দুরভিসন্ধির ব্যাপারে পরিপূর্ণ সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ। তাদের অপচেষ্টা অতীতেও ব্যর্থ হয়েছে, আগামীতেও ব্যর্থ হবে, ইনশাআল্লাহ। সাইফুল ইসলাম সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য শহীদ হয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা তার সকল ভুলত্রুটি মাফ করে তাকে শহীদ হিসেবে কবুল করে জান্নাতুল ফেরদাউসের উচ্চ মাকাম দান করুন এবং শহীদ সাইফুল ইসলাম আলিফের পরিবারের প্রতি আল্লাহ তায়ালা ধৈর্য্য ধারণ করার তাওফিক দান করুক।
বুধবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম নগরীর জামিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে শহীদ সাইফুল ইসলাম আলিফের দ্বিতীয় জানাযার নামাজের পূর্বে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিং চত্ত্বরে তার প্রথম নামাজের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাযায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সংসদীয় দলের সাবেক হুইপ, চট্টগ্রাম মহনগরী জামায়াতের আমির ও সাবেক এমপি আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী। তিনি বলেন, ইসকনের সন্ত্রাসীরা তরুণ এই আইনজীবীকে আদালত চত্বর থেকে তুলে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। সাইফুল ইসলাম ন্যায়ের পথে লড়েছেন। সত্যের পথে লড়েছেন। সত্যের কাছে পরাজিত হয়ে ইসকন সন্ত্রাসীরা আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে কুপিয়ে শহীদ করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং জনসাধারণকে শান্ত থাকার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। ইসকন সন্ত্রাসীদের হামলায় শহীদ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যার বিচার হবেই ইনশাআল্লাহ। তিনি অনতিবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান।অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, গতকাল ইসকন কিভাবে আমার ভাইকে শহীদ করেছে তা আপনারা দেখেছেন। বাংলার পলাতক ডাইনি হাসিনা ভারতে বসে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। আওয়ামী লীগের এই স্বপ্ন আর বাস্তবায়ন হবে না। ইসকন উগ্র সন্ত্রাসী ও জঙ্গি গোষ্ঠীকে অবিলম্বে বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এদেশে আওয়ামীলীগকে পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়া হবে না।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানরা অন্য ধর্মের প্রতি সহানুভূতিশীল। আর এই সহানুভূতিকে কাজে লাগিয়ে এডভোকেট সাইফুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তাদের আর নিস্তার দেওয়া হবে না। বিগত খুনি হাসিনা তিলে তিলে এই জঙ্গি সংগঠন ইসকনকে প্রতিষ্ঠা করেছে। অবিলম্ব আইনজীবী সাইফুলের খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
জানাযার নামাজ পূর্বে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি কপোর্রেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, বিএনপি নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রমুখ।
শহীদ এড. সাইফুল ইসলামের নামাজে জানাযার ইমামতি করেন নগর জামায়াতের আমির আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী। জানাযার নামাজের উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক আহসান উল্লাহ, নগর জামায়াতের নায়েবে আমির ড. আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ ও মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতের আমির আলাউদ্দীন সিকদার, দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির এডভোকেট আনোয়ারুল আলম চৌধুরী, নগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন, নগর জামায়াতের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খায়রুল বাশার, মুহাম্মদ উল্লাহ, ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস ও মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী, নগর জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, ডা. এ কে এম ফজলুল হক, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, ছাত্রনেতা ফখরুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, নাহিদুল ইসলাম, মুহাম্মদ হাসনাইন, নগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, আমির হোছাইন, ফখরে জাহান সিরাজী সবুজ, হামেদ হাসান এলাহী চট্টগ্রাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ লাখো জনতা অংশ নেন।