বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
তজুমদ্দিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্সদের পদায়নের এক দফা দাবিতে চার ঘণ্টার কর্মবিরতি শারদীয় দুর্গাপূজা সুুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন করা হবে -বললেন ফরিদা খানম, জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম : মানব সময় সাহিত্যে প্রকাশিত হলো কেয়া মণি’র লেখা “অভ্যস্ত পাথর” কবিতাটি অপরাজনীতি বিপক্ষে রুখে দাঁড়াতে ছাত্রদল প্রস্তুত রয়েছে – মতবিনিময় সভায় সাইফুল আলম মানব সময় সাহিত্যে প্রকাশিত হলো রীতা জেসমিন এর লেখা “গোধূলি’ তজুমদ্দিনে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষকদের মানববন্ধন: বেনাপোল যানজট নিরসনে পোর্ট থানার নবাগত ওসি ও সার্জেন্টের ঝটিকা অভিযান রামপুর ওয়ার্ড বিএনপি উদ্যোগে উঠান বৈঠক ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বে -শপিং সেন্টার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ভোক্তা অধিকার চট্টগ্রাম এর অভিযান ও জরিমানা :

ভোলার বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুর রউফ’র ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৪, ২.৩২ পিএম
  • ৬৭ বার পঠিত

মানব সময় ডেস্ক :
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ৪ নং কাচিয়া ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুর রউফ’র ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১২ মার্চ।

পারিবারিক সুত্র জানায়, ১৯৭১’র রনাঙ্গনের বীর মু্ক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুর রউফ উল্লেখিত ইউনিয়নের সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৪৪ সালের ২৭ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা বাবা আব্দুল হাই, মাতা শামর্থ ভানু।

তারুণ্যে পদার্পণ করেই তিনি পূর্ব পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইস্টবেংগল রেজিমেন্টে যোগ দেন। অকুতোভয় এ সাহসী সৈনিক তাঁর কর্মজীবনে নানা প্রতিকুলতার মাঝেও রেজিমেন্টের বিভিন্ন ইভেন্টে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। এরমধ্যে, ২৯ বার হেলিকপ্টার হতে জাম্প উল্লেখযোগ্য। তাঁর কর্মজীবনে তিনি পাকিস্তান, রাওয়ালপিন্ডি, পেশোয়ার ও করাচিতে বীরত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি প্রথম যশোর সেনানিবাসে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী হিসেবে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। গোপালগঞ্জের পাইককান্দিসহ পুরো জেলায় তাঁর সাহসী গেরিলাযুদ্ধে পাকহানাদার বাহিনী আতংকিত ও দিশেহারা হয়ে পড়ে। যুদ্ধ বিজয়ের শেষদিকে সাথী যোদ্ধাদের বাঁচাতে গিয়ে ডান হাতে পাঁচটি গুলিবিদ্ধ হন। এসময় শত্রু পক্ষের অনেকেই ঘটনাস্থলে মারা যান। অতঃপর বহু প্রতিকুল পথ পেরিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। তিনিই প্রথম ভোলা জেলার মুক্তিযোদ্ধা ভারতে প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সেনাপতি কর্ণেল এমএজি ওসমানী সহ দেশের বরেন্য রাজনীতিবিদের সান্নিধ্য পান।ত্রিশ লাখ শহীদ ও দু’লাখ মা-বোনের সম্মানের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলো। জাতি পেল লাল সবুজের পতাকা এবং নিজস্ব মানচিত্র। মুক্তিযোদ্ধারা খেতাব পেল জাতির সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সন্তান। বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুর রউফের মতো সব মুক্তিযোদ্ধার মুখে স্বাধীনতার প্রাপ্তির হাসিই যেন একটি বাংলাদেশ!

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, কর্ণেল এমএজি ওসমানীসহ স্বাধীনতা পরবর্তি শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদদের ভালোবাসা ও সান্নিধ্য অর্জন করেন তিনি।স্বাধীনতা পরবর্তি সেনাবাহিনী হতে সেনানায়েক হিসেবে অবসর নেন। এরপর সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তিনি দীর্ঘদিন চাকরি করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সদালাপী , ধার্মিক,জনদরদি ও সত্যবাদী
হিসেবে সর্বমহলে সমাদৃত ছিলেন।

মু্ক্তিযুদ্ধের ওয়েবসাইটের লাল মুক্তিবার্তায় ক্রমিক নং ০৬০৪০৬০০০৩৮/২০০১, বেসামরিক গেজেট ৩৩৫/১৭এপ্রিল২০০৫, সামরিক গেজেট সেনা ৩২১২ নথিতে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সর্বশেষ সমন্বিত তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা নং-০১০৯০০০১৮০৮

” বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম গাজী আব্দুর রউফের সাথী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল ইসলাম হাওলাদার
জানান, “১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ সকাল ৮ টার সময় যশোর ক্যান্টম্যান্টের ফাস্ট ইস্ট বেংগল রেজিমেন্টের ওপর তিনদিক থেকে পাকহানাদার বাহিনী (নাইন ভেলুস) হামলা চালায়। সেই যুদ্ধে নায়েক গাজী আব্দুর রউফ নিজের জীবনকে বিপন্ন জেনেও এমএমজি(মিডিয়াম মেশিন গান) দিয়ে হানাদার বাহিনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন।এসময় পাকবাহিনীর অনেকে হতাহত হন। এসময় শত্রুর আক্রমণে ডান হাতে পাঁচটি গুলিবিদ্ধ হন। সেদিন, রউফ সাহেব এগিয়ে এসে যে বীরত্বের পরিচয় দিয়েছেন। “আমরা কোনোদিন ভুলবো না আমাদের সেই প্রিয় বন্ধুর কৃতিত্বের কথা ”

বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুর রউফ ২০১৭ সালের ১২ মার্চ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁকে ভোলার নিজ বাড়িতে সেনাবাহিনীর গার্ড অব রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন তৌহিদের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী আছিয়া বেগম, ৫ ছেলে ও ১ মেয়ে রেখে যান।তাঁর বড় পুত্র সাংবাদিক ও চিকিৎসক ডা. গাজী মো. তাহেরুল আলম, ছোট সন্তান গাজী মো. হাসান ও কন্যা রূপজান বেগম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক, গাজী মো. হোসেন অব. সেনা সৈনিক, গাজী মোক্তাদির ও গাজী মো. রানা সম্মানজনক পেশায় কর্মরত। এ বীর সেনানীর মৃত্যুতে এলাকায় একজন সাদামনের গুণি ব্যক্তিত্বের শুন্যতা অনুভুত হয়। তিনি ছিলেন ধর্মপ্রাণ, গরিবের বন্ধু ও পরোপকারী।

যতোদিন রবে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা বহমান, যতোদিন মুক্তবাংলায় স্বাধীনতার লাল সবুজ পতাকা উড়বে ততোদিন দ্বীপজেলা ভোলার কৃতি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম গাজী আব্দুর রউফ’র নাম বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে অম্লাণ হয়ে থাকবে।

লেখা: গাজী তাহের লিটন

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2021 manobsomoy
Theme Developed BY ThemesBazar.Com