manobsomoy desk :
সীতাকুন্ডের দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধ্যান; ০৩টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামাদি জব্দ এবং মূলহোতা জাহাঙ্গীর আলম ও তার সহযোগীসহ মোট ০২ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
১। “বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন ছিন্নমূল পাথরিঘোনা দূর্গম পাহাড়ি এলাকার জনৈক জাহাঙ্গীর আলম এর বাগান বাড়িতে কতিপয় ব্যক্তি অবৈধভাবে বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র তৈরী করে ক্রয় বিক্রয় করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ২২ আগষ্ট ২০২৩ ইং তারিখ র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত বাড়ীতে অভিযান পরিচালনা করে আসামী ০১। মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৩৯), পিতা- মৃত নুরুল আলম এবং ০২। মোঃ ইমন (২৪), পিতা- মোঃ ইউসুফ, উভয়ের সাং- ছিন্নমূল, থানা- সীতাকুন্ড, জেলা- চট্টগ্রাম’দের আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে বর্ণিত বাগান বাড়ীর টিনের দোচালা ঘরের ভিতর থেকে সাদা প্লাষ্টিকের বস্তা হতে সদ্য প্রস্তুতকৃত ০৩টি লোকাল গান, ০১টি রাম দা এবং অস্ত্র তৈরীর বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধারসহ আসামীদের গ্রেফতার করা হয়।
৩। উল্লেখ্য যে, র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর নিকট তথ্য ছিল কতিপয় ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে সীতাকুন্ডের পাহাড়ী এলাকায় অস্ত্রের কারখানা স্থাপন করে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র তৈরি পূর্বক স্থানীয় জলদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী এবং ডাকাত দলের সদস্যদের নিকট বিক্রয় করে আসছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের ১টি অভিযানিক দল দীর্ঘদিন যাবত গোয়েন্দা তৎপরতা চালাতে থাকে। যেহেতু এলাকাটি দূর্গম পাহাড়ি এলাকা এবং অপরিচিত কাউকে দেখলেই অস্ত্র তৈরির সাথে জড়িত সিন্ডিকেটের সদস্যগণ সতর্ক হয়ে যেত যার ফলে তাদের অবস্থান সনাক্তকরণ ছিল একটি কঠিন বিষয়। তথাপিও র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর চৌকষ আভিযানিক দলের গোয়েন্দা তৎপরতায় ও পাহাড়ি এলাকার ভিতর দিয়ে বিশেষ কৌশলে এলাকায় প্রবেশ করায় উক্ত চক্রের সদস্যরা টের পায়নি। অতঃপর কারখানার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে বাগান বাড়ীর টিনের দোচালা ঘরে অভিযান পরিচালনা করে সদ্য প্রস্তুতকৃত ০৩টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ প্রধান কারিগর মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও তার সহযোগী মোঃ ইমন’কে আটক করতে সক্ষম হয়।
৪। আটককৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ পরষ্পর যোগসাজশে অবৈধভাবে দেশীয় তৈরী আগ্নেয়াস্ত্র স্থানীয় জলদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী এবং ডাকাত দলের সদস্যদের নিকট বিক্রয় করে আসছে। স্থানীয় সূত্রমতে ও গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী আটককৃত আসামীরা ৭-৮ বছর ধরে এই পেশার সাথে জড়িত। তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সকলের দৃষ্টি এড়াতে মাঝে মাঝে লোক দেখানো কৃষি কাজ করে থাকে।
৫। উল্লেখ্য, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে ধৃত আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম এর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানায় অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য, বিশেষ ক্ষমতা, ডাকাতির প্রস্তুতি, মাদকদ্রব্য আইন সংক্রান্তে ০৮ টি মামলা পাওয়া যায়।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামী ও উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্র এবং জব্দকৃত অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামাদি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।