রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
তজুমদ্দিনে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা বোর্ড’র অধীনে কেয়া বৃত্তি পরীক্ষা সম্পন্ন ডি.এইচ.এম’এস হোমিও চিকিৎসক কল্যাণ সোসাইটির উদ্যোগে বিজয় দিবস উদযাপন উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর বারেক আটক আলোর পথে-সাংবাদিক ক্লাবের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচি পালন চট্টগ্রাম মডেল স্কুলে বিজয় দিবস উদযাপন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পল্লী চিকিৎসক এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর কমিটি গঠন উপলক্ষে মতবিনিময় ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত : তজুমদ্দিনে ইরি-বোরো ধানের স্কীম নিয়ে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নেতার সংঘর্ষে আহত ২ জন জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটি-চট্টগ্রাম’র বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন চট্টগ্রাম মডেল স্কুল’র ইন হাউস প্রশিক্ষণ

করোনার চেয়ে ভয়ংকর ওমিক্রন! সচেতনতায় আসতে পারে নিয়ন্ত্রণ – মুহাম্মদ আলী

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ৮.০১ এএম
  • ৫৫৪ বার পঠিত

মানব সময় 

পাঠক মতামত 

দেশে ধীরে ধীরে করোনার সংক্রমণ বেড়েই চলছে। করোনার এই সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ হলো এর নতুন ধরণ ওমিক্রন। তবে এ পর্যন্ত দেশে নতুন এই ভেরিয়েন্টের রোগী ২০ জন শনাক্ত হয়েছে। ওমিক্রন হোক বা অন্য কোনো ভ্যারিয়েন্ট হোক, মূল কথা হচ্ছে, মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে সেটাই হচ্ছে মুল বিষয়। সাধারণত শীতের এই সময়টাতেই বিশ্বে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের দেশগুলোতে এখন করোনার চতুর্থ, পঞ্চম ঢেউ চলছে বলে জানা গেছে। পার্শ্ববর্তী ভারতেও এর ঢেউ চলছে। এটা ওমিক্রনের কারণেই হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। ওমিক্রন সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এটি ডেল্টার মতো প্রাণঘাতী নয়, তবে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।আমাদের দেশের মানুষ যেভাবে করোনা সচেতনতায় এবং স্বাস্থ্যবিধির প্রতি অবহেলা, অবঙ্গা করে আসছে সেই তুলনায় আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে আমাদের দেশে করোনার সংক্রমণ এখনো ব্যাপক আকার ধারণ করেনি। তবে সংক্রমণের হার কিছুটা বেড়েছে। ১লা জানুয়ারি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল ৩৭০ জন। গত ৬ জানুয়ারি তা বেড়ে দাঁড়ায় ১১৪০ জনে। এ থেকে বোঝা যায় যে, সংক্রমণ ধীরে ধীরে বাড়ছে। এ প্রেক্ষিতে, সরকারও সচেতন হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ বেশ কিছু নির্দেশনাও দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভার বৈঠকে বিভিন্ন নির্দেশনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে, টিকা নেয়ার সনদ ছাড়া হোটেল, রেস্টুরেন্ট, শপিংমলে প্রবেশ করা যাবে না। ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারবে না।ট্রেন, বিমান ও লঞ্চে চলাচলও করা যাবে না।
করোনা প্রতিরোধের মূল হাতিয়ার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। মাস্ক পরা, কিছুক্ষণ পরপর সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করা। জনসমাগম এড়িয়ে চলা। এই বিধিনিষেধগুলো মেনে চললেই করোনা থেকে সুরক্ষা পাওয়া যাবে। আমাদের দেশে এখন এই স্বাস্থ্যবিধিগুলো বলতে নেই বললেই চলে। কেউই স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কাই করছে না। বিশেষ করে টিকা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে মানুষের মধ্যে অবাধে চলাফেরা ও মেলামেশা শুরু হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে যেনো করোনা বাংলাদেশ থেকে চিরতরে নির্মূল হয়ে গেছে। টিকা প্রদান কার্যক্রমে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছি। এ পর্যন্ত টিকার উপযুক্ত প্রায় ৪০ ভাগ মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। করোনার সংক্রমণ রোধে কমপক্ষে ৫০ ভাগ মানুষকে পুরোপুরি টিকা দিতে হবে বলে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন। এদিকে ইতোমধ্যে সরকার ডাবল ডোজ টিকা নেয়াদের বুস্টার ডোজ টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে। পাশাপাশি প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হচ্ছে। টিকা কার্যক্রম দ্রুত করার ক্ষেত্রে নিবন্ধন জটিলতা অনেকের কাছে অন্তরায় হয়ে রয়েছে। যারা শিক্ষিত ও সচেতন তাদের পক্ষে নিবন্ধন সহজ হলেও অদক্ষ সাধারণ মানুষের জন্য তা অত্যন্ত জটিল। ফলে ইচ্ছা থাকলেও অনেকে নিবন্ধন জটিলতার কারণে টিকা নিতে পারছে না। এর মধ্যে নতুন করে যেমন সংক্রমণ হার ধীরলয়ে বাড়ছে, তেমনি শঙ্কাও বাড়ছে। এ প্রেক্ষিতে, গণহারে টিকা প্রদান কর্মসূচি এবং সাধারণ মানুষ যাতে টিকা কেন্দ্রে গিয়ে সহজে টিকা নিতে পারে, এ ব্যবস্থা করা উচিৎ। নিবন্ধন করতে হলে, তা আরও সহজ করা যেতে পারে। টিকা প্রদান প্রক্রিয়া যত সহজ করা হবে, করোনা সংক্রমণও তত দ্রুত রোধ করা যাবে বলে আশা। টিকা গ্রহন করতে দেখা যায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, এমনকি টিকা গ্রহণ করার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছে অথচ তাদের অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক থাকেনা গা ঘেষে ঘেষে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে সেই বিষয়েও সরকারের দেখা উচিৎ।উন্নত বিশ্বের দেশগুলো ইতোমধ্যে তাদের টিকা প্রদান কার্যক্রম শেষ করেছে। তারপরও সেখানে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এ তুলনায়, আমাদের দেশে টিকার উপযুক্ত অনেক মানুষ এর বাইরে রয়ে গেছে। দেখা যাচ্ছে, টিকাসংকট না থাকলেও এর প্রদান কার্যক্রম গতিশীল হচ্ছে না। এমতাবস্থায় দেশের মানুষ পুরোপুরি টিকা গ্রহণ করার আগেই করোনার নতুন ধরণ ওমিক্রনে আক্রান্ত হওয়া শুরু করছে যা খুবই শঙ্কার এবং চিন্তার বিষয়।
করোনার নতুন সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি এবং নিয়মকানুন মানার কোন বিকল্প নেই।তাই সরকার যেসব নির্দেশাবলী দিয়েছে, তা মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এখন আর লকডাউনের মতো কোন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত হবে না বরং লকডাউনের বিকল্প হিসেবে সচেতনতা এবং স্বাস্থ‍্যবিধির উপর কঠোর পদক্ষেপ নেওয়াই হবে চ‍্যালেঞ্জ। লকডাউন মানে সবকিছু বন্ধ হওয়া এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়া। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন করে লকডাউন কোনোভাবেই সমীচিন হবে না কারণ বিগত বছরের লকাডাউনের কারণে দেশের অর্থনৈতিকের উপর যে প্রভাব পড়েছে তা এখনো কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয় নি দেশ এবং দেশের ছোট, বড় মাঝারি ধরণের ব‍্যবসয়ীরা। ফলে সেই ক্ষতির প্রভাব মোকাবেলা করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। লকডাউনের কারণে দেশের নিন্ম এবং মধ‍্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষেরা পড়ে চরম দূর্ভোগে। লকডাউনের মধ্যে ঠিক মতো ত্রাণ বন্ঠন কার্যক্রমও পরিচালনা করতে সক্ষম হচ্ছে না। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে করোনার চূড়ান্ত ঢেউয়ের মাঝেও লকডাউন দেওয়া হয়নি। তারা করোনা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ‍্যবিধির ওপর জোর দিয়েছে। আমাদেরও সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। করোনা প্রতিরোধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ‍্যক। মানুষকে সচেতন করার জন্য দেশের সকল শ্রেণীর পেশার মানুষ দলমত নির্বিশেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনগুলোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রথম ডোজ থেকে শুরু করে বুস্টার ডোজ প্রদান পর্যন্ত কার্যক্রম সহজ ও গতিশীল করা জরুরী, টিকা কার্যক্রম আরও সহজ করে দিতে হবে, যাতে সকলে খুব দ্রুত গতিতে টিকা গ্রহণ করতে পারে এবং টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগে আরও জোরালো ভাবে প্রচারণা এবং সাধারণ মানুষ কে উৎসাহ প্রদান করতে হবে।আমরা আশা করব, সংক্রমণ বৃদ্ধির শুরুতেই প্রত্যেকে সচেতন হবে এবং সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা অবশ্যই যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে সক্ষম হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2021 manobsomoy
Theme Developed BY ThemesBazar.Com