সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
তজুমদ্দিনে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন শিক্ষা বোর্ড’র অধীনে কেয়া বৃত্তি পরীক্ষা সম্পন্ন ডি.এইচ.এম’এস হোমিও চিকিৎসক কল্যাণ সোসাইটির উদ্যোগে বিজয় দিবস উদযাপন উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর বারেক আটক আলোর পথে-সাংবাদিক ক্লাবের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচি পালন চট্টগ্রাম মডেল স্কুলে বিজয় দিবস উদযাপন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পল্লী চিকিৎসক এসোসিয়েশন চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর কমিটি গঠন উপলক্ষে মতবিনিময় ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত : তজুমদ্দিনে ইরি-বোরো ধানের স্কীম নিয়ে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নেতার সংঘর্ষে আহত ২ জন জাতীয় মানবাধিকার সোসাইটি-চট্টগ্রাম’র বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালন চট্টগ্রাম মডেল স্কুল’র ইন হাউস প্রশিক্ষণ

বজ্রপাতে মৃত্যু কমাতে একডজন সুপারিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই, ২০২১, ৪.২৮ এএম
  • ৪৫৪ বার পঠিত
দেশে বজ্রপাত কমাতে এ সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান স্থাপনসহ একডজন সুপারিশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের কাছে এসব সুপারিশ করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখযোগ্য সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো বজ্রপাতকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে গুরুত্ব দেওয়া, এলাকাবাসীকে আগাম সতর্ক করা, বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা নির্ধারণ করা, বহুতল ভবনে বজ্রপাত নিরোধক ব্যবস্থা স্থাপন করা, আপৎকালীন বজ্রপাত আশ্রয়স্থল নির্মাণ করা, ঝড়বৃষ্টির সময় মোবাইল, টিভি এবং এ জাতীয় অন্যান্য যন্ত্রপাতি ব্যবহারে সতর্ক হওয়া, বজ্রপাতের সময় উঁচু গাছ, টিনের চালা, বিদ্যুতের খুঁটি ও টাওয়ার থেকে দূরে থাকা, সারা দেশে বেশি করে উঁচু গাছ লাগানো।
প্রতিবেদনে দেশে বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার বেশকিছু কারণও উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব। এ ছাড়াও অপরিকল্পিত নগরায়ন ও কল-কারখানা স্থাপন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি, বনজ সম্পদের যথেচ্ছা ব্যবহারে গ্রিন হাউস প্রভাবে সৃষ্ট বাতাসে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াও বজ্রপাতের কারণ। এর ফলে দেশে তাপমাত্রা এক থেকে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগামী ২০ বছরে বজ্রপাত বর্তমান সময়ের তুলনায় ৫০ গুণ বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়াও একদিকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দক্ষিণের বঙ্গোপসাগর থেকে আসা গরম ও আর্দ্র বাতাস। অন্যদিকে উত্তরের হিমালয় থেকে আসা শুষ্ক ও ঠান্ডা বাতাসের সংমিশ্রণ বজ্রপাতের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে।

গত ২৭ জুলাই বগুড়ায় নন্দীগ্রামে বজ্রপাতে প্রাণ গেছে বাবা ও ছেলের। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কৃষক আবদুস সামাদ পাওয়ার টিলার দিয়ে গ্রামের পাশে সরিষাবাদ মাঠে ধানের জমি চাষ করছিলেন। মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় এ সময় তার ছেলে হাবিব তার বাবাকে সহযোগিতা করছিল। ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করার সময় হঠাৎ বজ্রপাতে বাবা ও ছেলের মৃত্যু হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে. বাংলাদেশে সাধারণত মার্চ থেকে জুলাই মাসের মধ্যে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটে। বজ্রপাতের কারণে গত ১১ বছরে প্রায় ২ হাজার ৬৪৪ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল লাইটনিং সেফটি ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিবছর সারা বিশ্বে বজ্রপাতে যত মানুষের মৃত্যু হয় তার একশ ভাগের চার ভাগ মারা যায় বাংলাদেশে। এ হিসাবে দেশে প্রতিবছর বজ্রপাতে গড়ে প্রায় ২৪০ জন মানুষ মারা যায়। এ ছাড়াও বজ্রপাতের ফলে বিপুলসংখ্যক গবাদিপশুসহ অন্যান্য প্রাণীও মারা যায়।

প্রতিবেদনে বজ্রপাতের বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ঝড়বৃষ্টির সময় মেঘের জলীয়বাষ্পের কণাগুলো বৈদ্যুতিক চার্জ সম্পন্ন হওয়ায় মেঘে স্থির বিদ্যুৎ সঞ্চিত হয়। এই বিদ্যুৎ সঞ্চিত হয়ে বৈদ্যুতিক চার্জের আধারের মতো কাজ করে। এই মেঘের ওপরের অংশে থাকে ধনাত্মক চার্জ ও নিচের অংশ থাকে ঋণাত্মক চার্জ। মেঘের দুই স্তরে এই চার্জ তারতম্যের কারণে সেখানে শক্তিশালী বিদ্যুৎ সৃষ্টি হয়। বাতাসকে বিদ্যুৎ পরিবাহী করে তোলে। আর এক্ষেত্রে ভূপৃষ্ঠের মধ্যে বিদ্যুৎ চলাচলের পথ তৈরি হয়। এর ফলে বজ্রপাত ঘটে।

জানা গেছে, বিশ্বে বজ্রপাতে বছরে প্রায় ২০ হাজার থেকে ২৪ হাজার মানুষ মারা যায়। আর প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষ আহত হয়। বজ্রপাতে বিশ্বে ক্ষতির পরিমাণ বছরে প্রায় ১০০ কোটি ডলার। এ ছাড়াও পৃথিবীতে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১০০ বার বজ্রপাত হয়। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিগত ১১ বছরে জাপানে বজ্র্রপাতে ৩৫ জন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২২০ জন মারা গেছে। একই সময়ে বাংলাদেশে বজ্রপাতে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৬৪৪ জন। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারতে বছরে বজ্রপাতে মৃত্যুর হার প্রতি কোটিতে একজন। আর বাংলাদেশে প্রায় ১৮ জন। নেপালে ২৪ জন। শ্রীলঙ্কায় ২৭ জন।

সম্প্রতি দেশে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট; রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর; ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ; ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর ও নেত্রকোনায় বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের হাওরাঞ্চলেও বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা বেশি।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিগত ৪ বছরের মধ্যে ২০১৮ সালে বজ্রপাতে সর্বোচ্চ ৩৫৯ জন মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছর জুন মাস পর্যন্ত বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে ২০৭ জনের। প্রতিবেদন অনুয়ায়ী, জুন ও জুলাই মাসে ভারী বর্ষণ ও বন্যার প্রকোপের সময় বেশি বজ্রপাতের আশঙ্কা থাকে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved  2021 manobsomoy
Theme Developed BY ThemesBazar.Com