ডেস্ক নিউজ :
১। “বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। অপহৃত ভিকটিম ১৩ বছর বয়সের এবং টাংগাইল জেলার ঘাটাইল থানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী। ভিকটিমের প্রতিবেশী সাদিয়া আক্তার রুনার সাথে তাদের ভাল সর্ম্পক ছিল। গত ৩১ জুলাই ২০২২ তারিখে রুনা ভিকটিমকে ফোন করে জানায় চট্টগ্রামে ভাল প্রতিষ্ঠান আছে, আরো ০২ জন মেয়ে পড়াশোনা করে তুমি আসলে ভাল পড়াশোনা করতে পারবে। পরদিন ০১ আগস্ট ২০২২খ্রিঃ তারিখ সকালে ভিকটিম কাউকে কিছু না বলে রুনার সাথে যোগাযোগ করে বাড়ী হতে বের হয়ে ঘাটাইল হতে চট্টগ্রামের হালিশহর চলে আসে এবং রুনার কথামতো মোঃ ফরিদ (২৮) এর সাথে সিএনজি করে হালিশহর থানাধীন একটি টিনসেড ভাড়াঘরে আসে। ভিকটিম ঘরে অন্য কোন মেয়ে মানুষ দেখতে না পেয়ে জিজ্ঞাসা করলে ফরিদ বিভিন্ন প্রকার তালবাহানা ও এলোমেলো কথাবার্তা বলতে থাকে। পরবর্তীতে রুনা ভিকটিমকে জানায় মোঃ ফরিদ তার স্বামী। ভিকটিম বাড়ি ফিরে যেতে চাইলে রুনা নিষেধ করে এবং তার টাকা পয়সা এবং অলংকারাদি নিয়ে নেয়। এছাড়া গত ০৩ আগস্ট ২০২২ তারিখে রাত ০১০০ ঘটিকায় আসামী ফরিদ ভিকটিমকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে ভিকটিম বটি দিয়ে ধাওয়া করলে ফরিদ চলে যায়।
৩। এদিকে ভিকটিমের বাবা ভিকটিমকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানায় একটি সাধারন ডাইরী দায়ের করেন যার নং-১৭৮ তারিখ- ০৩ আগস্ট ২০২২খ্রিঃ। পরবর্তীতে বিভিন্ন ভাবে মেয়ের সন্ধান করতে করতে জানতে পারেন যে, তার মেয়েকে চট্টগ্রাম শহরে কতিপয় অপরাধী আটকে রেখেছে। উক্ত বিষয়ে তার মেয়েকে উদ্ধার ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার জন্য ভিকটিমের বাবা র্যাব-০৭ চট্টগ্রাম বরাবর আবেদন করেন।
৪। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধার এবং অপহরনের সাথে জড়িত আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ০৬ আগস্ট ২০২২ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক ১৪৩০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানাধীন আগ্রাবাদ ছোটপুল এলাকার একটি টিনশেড ভাড়াঘর হতে ভিকটিমকে উদ্ধার করে এবং অপহরণের সাথে জড়িত আসামী সাদিয়া আক্তার রুনা (১৯), পিতা-ধলা মিয়া, সাং-দক্ষিন পাড়া, থানা-ঘাটাইল, জেলা-টাংগাইল এবং মোঃ ফরিদ (২৮), পিতা-মৃত নুর মোহাম্মদ, সাং-উত্তর চর মার্টিন, থানা-কমলনগর, জেলা-লক্ষিপুরকে আটক করতে সক্ষম হয়।
৫। গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামী মোঃ ফরিদ এর সাথে আসামী রুনার অবৈধ সম্পর্ক ছিল এবং তারা স¦ামী-স্ত্রীর পরিচয়ে বাসা ভাড়া করে থাকত। তারা মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন ভাবে সহজ সরল অভাবগ্রস্থ নারী ও শিশুদের কাজ দেওয়ার নাম করে এবং বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে, অর্থ উর্পাজনের জন্য পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত করত।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত ভিকটিম সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।