বানভাসি মানুষের জীবন
সেলিনা হোসেন
২২.০৬.২০২২
ভিজিয়ে দিলো চোখ আমার, ভাসিয়ে দিল বুক, সবকিছুই দেখে বুঝে বলেছিলাম,
আল্লাহ তোমার রহমত দ্রুতই বানভাসি মানুষের উপরে নাজিল হোক!
বুকে আমার রক্তক্ষরণ বইছে। চোখের কোণে কালো মেঘ,
অন্তরে আমার ভালোবাসার তৃষ্ণা। প্রার্থনায় আমার অবিরাম অন্তহীন সিলেট।
মনের গভীরতা ছুঁয়ে যায় গর্ভবতী মা’য়ের আকুলতায়,
তীব্র দহনে পুরছে হৃদয় বিরামহীন! ছোট ছোট শিশুগুলো যখন বেঁচে থাকবার কথা কয়!
কিশোর, যুবক, আবাল, বৃদ্ধ বনিতা সকলের একটাই আশা প্লাবিত হওয়া অথই পানি কবে রক্ত চুষারা শুসে নেবে।
বণ্যার পানি নেমে আবার পুনরায় তৈরি হবে। বসবাসের আবাসস্থল দূর্দশা যাবে ধুয়েমুছে মানুষের ভালোবাসার কবে হবে জয়?
জ্বলমলিয়ে রুদ্রময় পুরো সিলেট শহর জুড়ে। হাসি খেলবে বৃদ্ধ মা’য়ের বুকে আশাবাদী স্বপ্ন ছুঁয়ে। গবাদি পশুগুলো যখন নিজ কৃষকের গুয়াল ঘরে,
খাদ্য খাবে পেট ভরে, দুধ দিবে বালতি ভরে।
মাছগুলো সব নদী, বিল, হাওরে, বাওরে সাঁতার কাটবে,
আপন খেয়ালে হারিয়ে নিজেকে মাতবে।
বোবাকান্না করবে না আর কুকুরের বাচ্ছাগুলো,
বানরকে ক্ষুধার জ্বালায় তাড়া করবে না কুকুরের দল!
ইতিহাস সাক্ষী আছে একশত পঁচিশ বছরে কেউ কখনো দেখেনি এরকম বানভাসি জল।
চোখেমুখে লেপ্টে থাকা ভয়ঙ্কর কষ্টের দাবানল। আল্লাহ তুমি রহম কর,
চরম বিপদ থেকে রক্ষা করো!
আর করবো না খারাপ কাজ এবারের মতো কর আমাদের মাফ।
তোমার রহমতের চাদরে জড়িয়ে রাখো, তোমার বান্দাদের ফরিয়াদ কবুল কর।
হে রহমানের রাহিম, পরম করুনাময় দয়ার সাগর।
রক্ষা কর সকল প্রতিকূল ধ্বংসাত্মক শক্তি থেকে,
আমরাতো আর পারিনা সইতে বুক ফেটে যায় বাঁধভাঙ্গা জলের উষ্ণ অভ্যর্থনায়।