মানব সময় ডেস্ক নিউজ :
১। র্যাব প্রতিষ্ঠারলগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস্য উদঘাটন,অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। র্যাব-৭ চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, মাদক উদ্ধার, ছিনতাইকারী, অপহরনকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারন জনগনের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। উপরোক্ত ভূক্তভোগী ভিকটিমের বিগত ১৮ বছর পূর্বে ইসলামি শরীয়া মোতাবেক বিবাহ হয়। ভিকটিমের বিবাহ জীবনে ০১ টি মেয়ে সন্তান রয়েছে। ভিকটিমের স্বামী বিগত ০৬ বছর যাবৎ মালেশিয়াতে অবস্থান করিতেছে। গত ০১ বছর পূর্বে ভিকটিমের স্বামী তাকে সন্তানের লেখা পড়া করানোর জন্য চট্টগ্রাম শহরে কোন এক স্থানে ভাড়াটিয়া বাড়িতে থাকতে বলেন। তার স্বামীর কথা মতো সে চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানাধীন এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেয়। বাসা ভাড়া নেওয়ার ৩ মাস বিগত হয়ে গেলেও ভিকটিমের স্বামী ভিকটিমের সহিত কোন প্রকার যোগাযোগ করে না এমনকি কোন প্রকার টাকা পয়সা দেয়না। এ বিষয় নিয়ে ভিকটিম অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়ে। সে তার প্রতিবেশীদের সহিত বিষয়টি আলোচনা করলে কোন এক জনৈক প্রতিবেশী তাকে জানান যে, বৈদ্য/কবিরাজ নামের তার এক পরিচিত লোক আছে। তাহার সহিত যোগাযোগ করিলে হয়ত তোমার উপকার হওয়ার সম্ভবনা আছে। ভিকটিম তাহার কথা বিশ^াস করিয়া উক্ত কবিরাজ মোহাম্মদ আলী (৬২) এর কাছে ফোন করিলে তিনি জানান এ বিষয়ে কবিরাজী চিকিৎসা আছে। পরবর্তীতে কবিরাজ মোহাম্মদ আলী (৬২) ভিকটিমের বর্তমান ঠিকানার বাসায় আসে এবং তাকে কিছু তাবিজ ও পানি পড়া দেয়। ভিকটিম তাহাকে বকশিস হিসাবে ৫০০০/- টাকা প্রদান করে। উক্ত তাবিজ ও পানি পড়ায় কোন প্রকার কাজ না হওয়ায় ভিকটিম কবিরাজকে বিষয়টি জানালে কবিরাজ তাহার বাসায় যাইতে বলেন। ভিকটিম তখন কবিরাজের বাসায় যায় এবং পুনরায় তাহাকে ৫০০০/- টাকা দিয়ে আবার তাবিজ ও পানি পড়া নিয়ে আসে। সেগুলো দিয়েও ভিকটিমের কোন উপকার না হওয়ায় কবিরাজকে ফোন দিলে সে জানায় পুনরায় তার বাসায় গিয়ে ভাল তাবিজ ও পানি পড়া নিয়ে আসতে। তখন ভিকটিম তার বাসায় গিয়ে তাকে আবার ৫০০০/- টাকা প্রদান করে পুনরায় তাবিজ ও পানি পড়া নিয়ে আসে। এতো কিছু করার পর ও ভিকটিমের স্বামী তাহার সহিত কোন প্রকার যোগাযোগ করেনি। বিষয়টি তখন কবিরাজ মোহাম্মদ আলী (৬২)‘কে অবগত করিলে সে তাকে তার বাসায় দেখা করতে বলেন।
৩। ভিকটিম গত ২২ জানুয়ারি ২০২২ ইং তারিখ সকাল ১১.০০ ঘটিকার সময় তার প্রতিবেশীর ছেলে বাবু (৫)‘কে সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানাধীন বাথুয়া (বড় বাড়ি) কবিরাজ মোহাম্মদ আলী (৬২) এর আধাপাঁকা বাড়ির ৩নং রুমে অবস্থান করে এবং ভিকটিম জিজ্ঞাসা করে যে আপনার দেওয়া তাবিজ কবজ দিয়ে কোন উপকার হয় নাই কেন ? এই কথা বলার পর কবিরাজ তাকে বলেন তাহার সহিত শারীরিক সম্পর্ক করলে তাহলেই তোমার স্বামী তোমার সহিত যোগাযোগ করবে। তার এই কু-প্রস্তাবে ভিকটিম অসম্মতি প্রকাশ করিলে সে বলে তোমাকে আমার সহিত শারীরিক সম্পর্ক করতে হবেনা। এ বলে কবিরাজ পাশের রুম থেকে কাঁচের গøাসে করে ০১ গøাস পানি নিয়ে এসে ভিকটিম খেতে বলেন। ভিকটিম তখন সড়ল বিশ^াসে পানি টুকু খেয়ে ফেলে। পানি খাওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যে সে অচেতন হয়ে যায় এবং খাটের উপর শুয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ঐদিন বিকাল আনুমানিক ১৫৩০ ঘটিকায় ভিকটিমের জ্ঞান ফিরলে দেখতে পায় যে সে কবিরাজ মোহাম্মদ আলী (৬২) এর বাড়ির ৩নং রুমের খাটের উপর শোয়া এবং তার শরীরে পোষাক অশালীন অবস্থায় রয়েছে তখন ভিকটিম কান্নাকাটি শুরু করলে কবিরাজ তখন ভিকটিমের সাথে নিয়ে যাওয়া শিশু বাবুকে সহ একটি রিক্সায় করে তার বাসায় পাঠিয়ে দেয়।
৪। গত ২৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ সকাল আনুমানিক ০৮৩০ ঘটিকায় ভিকটিম সুস্থ্য/স্বাভাবিক হলে সে বুঝতে পারে কবিরাজ মোহাম্মদ আলী (৬২) তার সরলতার সুযোগ নিয়ে পানির সহিত কোন কিছু মিশিয়ে তাকে খাইয়ে অজ্ঞান করে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক করে। বিষয়টি তখন সে তার আত্মীয় স্বজনসহ আশপাশের পাড়া প্রতিবেশির নিকট জানায়।
৫। গত ২৪ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ ভিকটিম ধর্ষকের বাড়ির সামনে গিয়ে তাকে খোজাখুজির চেষ্টা করলে তখন রাস্তার পাশে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি টহলগাড়ি দেখে তাদেরকে বিষয়টি অবগত করে। ভিকটিমের উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি চৌকস আভিযানিকদল উক্ত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোহাম্মদ আলী (৬২), পিতা-মৃত সুলতান আহমদ, সাং- বাথুয়া, থানা- হাটহাজারী, জেলা- চট্টগ্রামকে আটক করতে সক্ষম হয়। এসময় আসামীর কাছ থেকে প্রতারনা মূলক বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
৬। পরবর্তীতে আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, সে একজন ভুয়া কবিরাজ এবং প্রতারনার মাধ্যমে মানুষকে বিভিন্নভাবে তাবিজ পানি পড়াসহ বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে অসহায় নারীদের নিয়ে এসে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক করে এবং তাদের নিকট হইতে প্রতারনার মাধ্যমে টাকা ছিনিয়ে নেয় বলে স্বীকার করে।
৭। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।