মানব সময় ডেস্ক :
১“বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। সারাদেশে কিশোর গ্যাং কালচার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, যার মধ্যে ফেনী জেলা উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন ছত্রছায়ায় নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে কিশোররা ব্যবহৃত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরণও পাল্টে যাচ্ছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই থেকে শুরু করে খুনাখুনিসহ নানা অপরাধে কিশোর-তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে। মাদক ব্যবসা ও দখলবাজিতেও তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে। নানা অপরাধে জড়িয়ে কিশোররা ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। ফেনী জেলাতে বিভিন্ন নামের কিশোর গ্যাং গ্রুপ কর্তৃক আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই, মাদক ব্যাবসা এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।
৩। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বিশেষ সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, কতিপয় দৃষ্কৃতিকারী কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ফেনী জেলার ফেনী রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ১৪ মে ২০২৪ ইং তারিখ আনুমানিক ২১৪৫ ঘটিকায় বর্ণিত এলকায় অভিযান পরিচালনা করে PNF নামক কিশোর গ্যাং গ্রæপের প্রধান আসামি ১। মোঃ তাজুল ইসলাম @ রিয়াজ (২৮), পিতা-মোঃ ফজলুর রহমান, সাং-শাকতলা বেপারী বাড়ি, থানা- চৌদ্দগ্রাম, জেলা-কুমিল্লা, ২। মোঃ কামাল হোসেন (২০), পিতা-মোঃ ইসমাইল, সাং-কুমড়ী নজিরপুর, থানা-বানিয়াচং, জেলা-হবিগঞ্জ, ৩। মোঃ ইমন (১৯), পিতা-হারুন, সাং-গুনবতী, থানা-চৌদ্দগ্রাম, জেলা-কুমিল্লা, ৪। মোঃ বেলাল হোসেন @ সুমন (২০), পিতা-বাহার মিয়া, সাং-উদয় সাধুর হাট, থানা-নোয়াখালী সদর, জেলা- নোয়াখালী এবং ৫। মোঃ নজরুল ইসলাম @ বাবু (২০), পিতা-মোঃ নবাব মিয়া, সাং-কালামুন্সি, থানা-কবিরহাট, জেলা- নোয়াখালী’দেরকে আটক করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামিদের দেহ তল্লাশী করে তাদের নিজ হাতে বের করে দেয়া মতে ০২ টি ধারালো স্টীলের চাকু উদ্ধারসহ তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা PNF নামক কিশোর গ্যাংয়ের হয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে আসছিল বলে স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, আসামিগণ ডাকাতির উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ফেনী রেলস্টেশন এলাকায় একত্রিত হয়েছিল।
৪। উল্লেখ্য PNF কিশোর গ্যাং নামক এই গ্রæপটি সাধারণত ফেনী রেলস্টেশন, ফেনী শহর এলাকায় স্থানীয়ভাবে রাস্তায় সংঘবদ্ধ হয়ে মারামারি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজী ও এলাকায় প্রভাব বিস্তার করাসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত। এই কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা ফেনী জেলার রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন গলি ও রোডে ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজী, নিজেদের মধ্যে মারামারি, অন্য সাধারণ কিশোরদের মারধর ও প্রাননাশের হুমকী প্রদান, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন এবং মাদক সেবন করে বলে জানা যায়। এছাড়াও তারা সাধারণ মানুষসহ দৈনন্দিন চলাচলরত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভীতি প্রদর্শন এর মাধ্যমে মূল্যবান জিনিসপত্র, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা ছিনতাই করে আসছিল বলে অকপটে স্বীকার করে।
৫।উল্লেখ্য যে, প্রাথমিকভাবে সিডিএমএস পর্যালোচনায় গ্রেফতারকৃত ০১ নং আসামি মোঃ তাজুল ইসলাম @ রিয়াজ (২৮) এর বিরুদ্ধে ফেনী সদর থানায় মাদক আইনে ০১ টি মামলা এবং ০২ নং আসামি মোঃ কামাল হোসেন এর বিরুদ্ধে ফেনী সদর থানায় ০১ টি চুরির মামলার তথ্য পাওয়া যায়।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামি ও উদ্ধারকৃত আলামত সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।