মানব সময় ডেস্ক নিউজ :
টানা ২ দিনের অভিযানে অবৈধভাবে এলপিজি সিলিন্ডার কাটার ০৩ জন মূল হোতাসহ পুরো সিন্ডিকেট র্যাবের হাতে গ্রেফতার; প্রায় ১০ হাজার সিলিন্ডার জব্দ।
১। “বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। গত ০৪ জুন ২০২২ খ্রি. তারিখে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থানাধীন ভাটিয়ারী এলাকায় বিএম ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভিতরে আগুন থেকে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন মাধ্যমে র্যাব-০৭ চট্টগ্রাম সংবাদ পায় যে, কতিপয় অসাধু সিন্ডিকেটের সদস্যরা দীর্ঘদিন থেকে সীতাকুন্ড থানার তুলাতুলী এলাকায় জনবহুল গ্রামে অবৈধ চোরাই এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার সংগ্রহ করে গ্যাস সিলিন্ডার কেটে টুকরা করে বিভিন্ন রি-রোলিং মিলে বিক্রি করে আসছে। এর ফলে এলাকার মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়া সহ যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে।
৩। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতে¦র সাথে গ্রহণ করতঃ উক্ত সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী এবং ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ০৮ জুন ২০২২ খ্রিঃ তারিখ হতে ০৯ জুন ২০২২খ্রিঃ তারিখ পর্যন্ত র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড থানাধীন ভাটিয়ারী ইউনিয়নের তুলাতুলি এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত সিন্ডিকেটের মুল হোতা ১। মোঃ ইসমাইল হোসেন @ কুসুম(৫১), পিতা- মৃত হাজী শফিউর রহমান, ২। মোঃ মহসীন (৫১), পিতা মৃত- ফয়েজ আহাম্মদ এবং ৩। মোঃ নুরুন নবী(৪৮), পিতা-মৃত ছিদ্দিক আহম্মেদসহ ০৯ জনকে আটক করে। পরবর্তীতে আটককৃত আসামীদের তত্ত¦াবধানে থাকা কুসুম এর ডিপো, ফকিরা মসজিদের উত্তর পাশের্^, কবির ষ্টিল এর পরিত্যাক্ত বিল্ডিং এর দক্ষিন পাশের্^ এবং আশেপাশের এলাকা থেকে প্রায় ১০,০০০টি এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার যার মধ্যে আনুমানিক ২,০০০টি কাটা অবস্থায় এবং গ্যাস সিলিন্ডার পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ০২টি ট্রাক উদ্ধারসহ আসামীদের গ্রেফতার করা হয়।
৪। গ্রাহক সেবার মান উন্নয়নের জন্য ও সিলিন্ডার গ্যাস বেশী ব্যবহারের জন্য কোম্পানী কমদামে গ্রাহকদের মাঝে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করে থাকে। প্রকৃত অর্থে একটি খালি গ্যাস সিলিন্ডারের মূল্য ২৮০০/- টাকা। এলপিজির বিধান এর ৯১ ধারা মোতাবেক সিলিন্ডারের আকার আকৃতি পরিবর্তন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সিলিন্ডার সমূহের মালিকানা কোম্পানীর কাছে থাকে যা ডিলার বা গ্রাহক একই সিলিন্ডারে বার বার এলপিজি রিফিল করে নেয়। বিস্ফোরক পরিদপ্তরের ছাড়পত্রের মাধ্যমে প্রথমে একটি গ্যাস সিলিন্ডার ১০ বছর ব্যবহারের পর পুনরায় পরীক্ষা করে ব্যবহারের উপযোগী হলে আরো ০৫ বছর ব্যবহারের পর বিস্ফোরক পরিদপ্তরের সদস্যদের উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানী এলপিজি সিলিন্ডার ধ্বংস করার কথা। গ্যাস সিলিন্ডার বাইরে কাটা সর্ম্পূন নিষেধ কিন্তু আসামীরা কোন প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার জন্য চোরাই ভাবে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার সংগ্রহ করে সেগুলো কেটে বিভিন্ন রি-রোলিং মিলে সরবরাহ করে থাকে।
৫। এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় এই চক্রের সদস্যদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। পরিবেশ দুষন ও এলাকাবাসী অত্যন্ত দুর্ঘটনার ঝুকিতে থাকলেও উক্ত সিন্ডিকেটের লোকদের ভয়ে তারা কোথাও অভিযোগ করত না। আসামীদের গ্রেফতারের ফলে এলাকায় স¦স্তি ফিরে এসেছে এবং জনমনে র্যাবের ভাবমুর্তি উজ্জল হয়েছে। উল্লেখ্য গ্রেফতারকৃত ০১ নং আসামী মোঃ ইসমাইল হোসেন @ কুসুম গত ১২ জুলাই ২০২১ খ্রিঃ তারিখে সিলিন্ডার কাটার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিল।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্থান্তর করা হয়েছে।