ডেস্ক নিউজ :
১। র্যাব প্রতিষ্ঠারলগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস্য উদঘাটন,অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। র্যাব-৭ চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, মাদক উদ্ধার, ছিনতাইকারী, অপহরনকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারন জনগনের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ইং তারিখ ৫ম শ্রেনীতে পড়–য়া এক ভিকটিমকে এসিড মারার হুমকি, পরিবারের সদস্যদের হত্যার ভয় এবং ভিকটিমের বড় বোনের সংসার ভাঙ্গার ভয় দেখিয়ে ভীতিকর পরিবেশ তৈরী করে ১০ বছরের শিশুকে আসামী উত্তম তালুকদার বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করে। উক্ত বিষয়ে ভিকটিম এর ভাই বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার রাউজান থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং-০২ তারিখ- ০২/১০/২০১৬, ধারা- নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধনী/২০০৩) এর ৯(১) রুজু হয়।
৩। উল্লেখ্য যে, কুখ্যাত ধর্ষক সব সময় একটা এসিডের বোতল সাথে নিয়ে ভিকটিমকে ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করত। আসামী প্রতিবেশী হওয়ায় সুযোগমত উক্ত আসামী বাদীর বাড়ীতে এসে এসিড মারার ও হত্যার হুমকি দিয়ে ভিকটিমকে ধর্ষন করে। সর্ব শেষ গত ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ইং তারিখ সন্ধা অনুমান ১৮০০ ঘটিকায় একই কায়দায় নির্যাতন করে ধর্ষণ করার ফলে ভিকটিম খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। ভিকটিম এর ভাই খাওয়া দাওয়া বন্ধ করার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তার ভাইকে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়। ভিকটিমের ভাই সব কথা শুনে ভিকটিমকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ওসিসি) তে চিকিৎসা করান। এক পর্যায়ে ঘটনাটি উক্ত এলাকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
৪। বাদী ন্যায় বিচার ও আসামী গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে স্বারকলিপি দাখিল করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার তদন্ত শেষে আসামী উত্তম তালুকদার, পিতা- রনজিত তালুকদার, সাং- জামুয়াইন তালুকদারবাড়ী, থানা- রাউজান, জেলা- চট্টগ্রামের অপরাধ প্রমানিত হওয়ায় আসামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/২০০৩) এর ৯(১) ধারা মতে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলটি প্রথমে বিজ্ঞ বিচারক, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২, চট্টগ্রামে বিচার শুরু হয়। মামলার গুরুত্ব অনুসারে গত ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ইং তারিখ মামলাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের গেজেটভুক্ত হয় এবং মামলাটি বিজ্ঞ দ্রæত বিচার ট্রাইবুনাল চট্টগ্রামে বিচারের জন্য স্থানান্তর করা হয়। বিচার শেষে আসামীকে দোষী সাবস্থ্য করে বিজ্ঞ বিচারক দ্রæত বিচার ট্রাইবুনাল চট্টগ্রাম উক্ত আসামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০,০০০/- টাকা জরিমানা প্রদান করেন।
৫। ঘটনার পর থেকে আসামী আত্মগোপন করে দীর্ঘ ০৫ বছর যাবৎ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতা র্যাব-৭, চট্টগ্রাম ধর্ষণকারীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি চালায়। গোয়েন্দা নজরদারির একপর্যায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, ধর্ষণকারী চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানাধীন রেলওয়ে কলোনী এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষণকারী আসামী উত্তম তালুকদার, পিতা- রনজিত তালুকদার, সাং- জামুয়াইন তালুকদারবাড়ী, থানা- রাউজান, জেলা- চট্টগ্রামকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে উক্ত ধর্ষণের সত্যতা স্বীকার করে।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।