মানব সময় ডেস্ক :
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক ফুটবলার ও বাফুফের সাবেক সহ-সভাপতি তাবিথ আউয়াল। সর্বোচ্চ ১২৩ ভোট পেয়ে আগামী চার বছরের জন্য সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন তাবিথ।
তাবিথের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী দিনাজপুরের ফুটবল সংগঠক মিজানুর রহমান চৌধুরী পেয়েছেন ৫ ভোট। ১৩৩ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১২৮ জন ভোট দিয়েছেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার মেজবাহ উদ্দিন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন।
এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের সভাপতির দায়িত্বে থাকা কাজী মো: সালাউদ্দিন যুগের অবসান হলো। এবারের ভোটে অংশ নেননি সালাউদ্দিন। গত মাসে নির্বাচন না করার ঘোষনা দিয়েছিলেন সালাউদ্দিন। ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন কিংবদন্তী এই ফুটবলার। এরপর ২০১২, ২০১৬ ও ২০২০ সালে তিনি বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হন।
শনিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাফুফের কংগ্রেস ও নির্বাচন। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া কংগ্রেস শেষে নির্বাচন শুরু হয় দুপুর ২টায়, সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলেছে ভোট গ্রহণ।
নির্বাহী কমিটির ২১ পদের মধ্যে ২০টির বিপরীতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন ৪৬ জন প্রার্থী। সভাপতি পদের ২ জন ছাড়াও ৪ সহ-সভাপতি পদে ৬ জন ও ১৫টি সদস্য পদে নির্বাচন করেছেন ৩৭ জন।
তরফদার রুহুল আমিন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় সিনিয়র সহসভাপতি পদে আগেই বিনা প্রতিদ্বনন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন ইমরুল হাসান।
এছাড়া সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন নাসের শাহরিয়ার জাহেদী, ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, সাব্বির আহমেদ আরেফ ও ফাহাদ মোহাম্মদ আহমেদ করিম। শনিবার ঘোষিত ফলাফলে এই চারজন ক্রমান্বয়ে বেশি ভোট পেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
চার প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১৫ ভোট পেয়েছেন রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের চেয়ারম্যান জাহেদী। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০৮ ভোট পেয়েছেন বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির ভাই হ্যাপি। আর ৯০ ভোট পেয়ে তালিকায় নাম উঠান ব্রাদার্স ইউনিয়নের সদস্যসচিব আরেফ। আর ৮৭ ভোট পেয়ে চতুর্থ সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন কে স্পোর্টসের স্বত্বাধিকারীরা করিম। সহ-সভাপতি পদে নির্বাচনে লড়াই করা বাকি দুই প্রার্থী সৈয়দ রুম্মন বিন ওয়ালী সাব্বির ও শফিকুল ইসলাম মানিক জিততে পারেননি। যেখানে ৬৬ ভোট পেয়েছেন সাব্বির। আর ৪২ ভোট পান মানিক।
সদস্য পদে জিতেছে যারা- ৯৮ ভোট পেয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নিবার্চনে এক নম্বর সদস্য হয়েছেন সাবেক জাতীয় ফুটবলার ইকবাল হোসেন। ফুটবলারদের মধ্যে সদস্য পদে আরো জিতেছেন গোলাম গাউস, সত্যজিৎ দাশ রুপু, ছাইদ হাসান কানন,বিজন বড়ুয়া ও জাকির হোসেন চৌধুরী ।
গত নির্বাচনে জিততে পারেননি ইকবাল হোসেন। এবার সর্বাধিক ৯৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। গত নিবার্চনে সহ-সভাপতি পদে ফেল করা আমিরুল ইসলাম বাবু ৯৬ ভোট পেয়ে হয়েছেন দ্বিতীয় । প্রথম বারের মতো নির্বাচনে অংশ নিয়ে ৯২ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন গোলাম গাউস। ২০২০ সালের নির্বাচনে প্রথম হওয়া জাকির হোসেন চৌধুরি ৮২ ভোট পেয়ে সপ্তম হয়েছেন। ৭২ ভোট পেয়ে সত্যজিত দাস রুপু দশম, ৬৭ ভোটে ছাইদ হাসান কাকন ১২তম ও ৬২ ভোটে বিজন বড়ুয়া ১৪তম সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
সদস্য ও নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ। বিতর্কিত এই নারী ফুটবল কর্মকর্তাও শেষ পর্যন্ত নির্বাচিত হয়েছেন। ফিফা ও বাফুফের নিষিদ্ধ সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের স্ত্রী তাসমিয়া রেজোয়ানা প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি জিততে পারেননি।
বিগত সময়ে সদস্য পদে হারা কামরুল হাসান হিল্টন,সাখওয়াত হোসেন ভূইয়া শাহীন এবার সদস্য পদে জয়ী হয়েছেন। পুরোনোদের মধ্যে আবারও জিতেছেন টিপু সুলতান, মাহিউদ্দিন সেলিম, ইমতিয়াজ আহমেদ সবুজ। নতুন মুখ মন্জুরুল করিম।সদস্য পদ ১৫ টি। সাইফুর রহমান মনি ও চুয়াডাঙ্গার এখলাস উদ্দিন সমান ৬১ ভোট পেয়ে টাই হয়েছেন। এই পদে পুনরায় ভোট হওয়ার কথা।ইকবাল হোসেন (৯৮), আমিরুল ইসলাম বাবু (৯৬), গোলাম গাউস (৯২), মাহিউদ্দিন সেলিম (৮৮),টিপু সুলতান (৮৭), মঞ্জুরুল করিম (৮৬), জাকির হোসেন চৌধুরি (৮২), মাহফুজা আক্তার কিরণ (৮১), কামরুল হাসান হিল্টন (৮০), সত্যজিত দাশ রুপু (৭৬), ইমতিয়াজ হামিদ সবুজ (৭২), ছাইদ হাসান কানন (৬৭), সাখওয়াত হোসেন ভূইয়া শাহীন ( ৬৬), বিজন বড়ুয়া (৬২)।বাফুফের নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে খুব শীঘ্রই শপথ গ্রহণ করে দায়িত্ব পালন করবেন নির্বাচিতরা।