সিটি প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম:কোম্পানীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মণি লাল দাশের হাত ধরে ক্রমাগত প্রসারিত হচ্ছে ব্যবসা। বাড়ছে লাভের পরিমাণও। কয়েক বছরে ৯ কোটি থেকে ১৫০ কোটিতে ফিরেছে পুজি, আত্মসাৎ করা অর্থ ফেরৎ আনতে পারলে আরো সচল হবে বলে আশা করছেন সিইও । সাবেক মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহেদ, তার খালাতো ভাই মো.মাহমুদুল হক এবং ফুপাতো ভাই মঈন উদ্দিনের অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৩১৬ কোটি টাকা লুট করার পর মরতে বসেছিল স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানী লিমিটেড (এসএওসিএল)। কিš‘ বর্তমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মনি লাল দাশের দক্ষতা ও বিচক্ষণতায় লাইফ সাপোর্ট থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) যৌথ মালিকানাধিন জ্বালানি বিপননকারী এই প্রতিষ্ঠানটি। জানা যায় ২০২১ সালের মার্চের দিকে শাহেদ সিন্ডিকেটের অনিয়ম ধরা পরার পর ১২৪ জন শ্রমিককে ছাটাই করা হয়। পরে ওই বছরের নভেম্বর মাসে অনিয়মের ফলে মৃতপ্রায় এসএওসিএলকে জীবিত করার উদ্যোগ নেয় বিপিসি । প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব দেওয়া হয় বিপিসির মহাব্যবস্থাপকের (অর্থ) দায়িত্বে থাকা বিচক্ষণ অফিসার মনি লাল দাশকে । মাত্র ৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা পুজি, প্রচন্ড মনোবল আর প্রচেষ্টা নিয়ে কাজ করতে থাকেন তিনি । দারুণ অর্থ কষ্ট থাকা সত্তে¡ও আন্তরিকতা দিয়ে কাজ করতে করতে ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছেন তিনি ও তাঁর টিম । কোন ব্যবসা ছিলনা আর ব্যবসা করার মতো যথেষ্ঠ টাকাও ছিলনা, কিন্তু সাহস হারাননি অল্প অল্প করে লুব অয়েল আমদানি করে বিক্রি শুরু করলেন । আস্তে আস্তে পুঁজি বাড়তে শুরু করল । বাড়লো কাজের পরিধিও । শুরু করলেন মার্কেটিং, বিক্রি শুরু করলেন ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল। ২০২১ সালে যেখানে অর্থের অভাবে ১০৯ জন শ্রমিক ছাটাই করেছিলেন এক বছরের ব্যবধানে আবার ১২৭ জন শ্রমিক নিয়োগ দিলেন । বর্তমানে ১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে এই মৃতপ্রায় প্রতিষ্ঠানের পুঁজি । বর্তমানে বিপুল পরিমাণ ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া লুবজোন ব্যান্ডের ইঞ্জিন অয়েল, গিয়ার অয়েল, সিএনজি ইঞ্জিন অয়েল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মোটরসাইকেল গিয়ার অয়েল,মেশিন অয়েল, এয়ার কম্পোসার অয়েল, আন্তর্জাতিক মানের আধুনিক গ্রীজ বিক্রি করেও বেশ সুনাম অর্জন করেছে। এব্যপারে স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানী লিমিটেড (এসএওসিএল) এর প্রধান নির্বাহী মনি লাল দাশ বলেন প্রতিষ্ঠানটি প্রায় মরেই গিয়েছিল আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতায় তা আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে । আমাকে দায়িত্ব দেওয়ার এক বছরের মাথায় বর্তমানে আমাদের ১৫০ কোটি টাকার মতো পুজি আছে, আমরা এই পুজিতে চালিয়ে নিচ্ছি। আশা করছি আমাদের এই প্রতিষ্ঠানের বদনাম গুছিয়ে সুনাম ফিরে আসবে। আর এজন্য সকলের আন্তরিক সহযোগীতা প্রয়োজন। পুর্বের অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাতকৃত অর্থের ব্যপারে তিনি বলেন বর্তমানে আমাদের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও আনুসাঙ্গিক খরচ বাবদ মাসে ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার মতো খরচ আছে । লুট হওয়া টাকাগুলো ফেরৎ আনার জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি । কয়েকটি মামলা চলমান আছে। ২ টি লিফট এর ২৮ লাখ টাকা এবং বিটুমিন বিক্রির টাকা ফেরৎ আনা হয়েছে। বাকি আত্মসাৎ করা অর্থগুলো ফেরৎ আনতে পারলে এটি আরো সচল হবে, একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিনত হবে ।