মানব সময় ডেস্ক :
১। বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধর্ষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। গ্রেফতারকৃত আসামী ইব্রাহিম খলিল (৪৬) লক্ষীপুর জেলার রামগতি থানাধীন চরলক্ষী গ্রামের আবুল কাশেম এর ছেলে। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় আসামী ইব্রাহিম খলিল ফেনী’র একটি ইটভাটায় মাঝি হিসেবে কাজ করতেন। উক্ত ইটভাটায় একই গ্রামের বেলার মাঝির ছেলে ইউসুফ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। কাজের সুবাধে বিভিন্ন প্রয়োজনে ইউসুফ প্রায়শই ইব্রাহিমের বাড়িতে যাতায়ত করতো। যাতায়তের এক পর্যায়ে ইব্রাহিমের স্ত্রী ভিকটিম রিনা বেগম এর সাথে ভিকটিম ইউসুফের অবৈধ সর্ম্পক গড়ে উঠে। গত ২০১৭ সালে মে মাসের শেষের দিকে ইউসুফ ইটের ভাটার কাজ ছেড়ে দিয়ে এলাকায় এসে দিন মজুর হিসেবে কাজ করতে থাকে। গত ০৩ জুন ২০১৭ ইং তারিখ সন্ধ্যায় ইব্রাহিম খলিল ফেনী থেকে বাড়িতে এসে তার স্ত্রী ভিকটিম রিনা বেগম ও ভিকটিম ইউসুফকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ইব্রাহিম ঘরে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে দু’জনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন ভিকটিমদ্বয়কে ঘটনাস্থল হতে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার পথে পরকিয়া প্রেমিক ভিকটিম ইউসুফ এবং ভিকটিম স্ত্রী রিনা বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ০৬ জুন ২০১৭ তারিখ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যবরণ করেন।
৩। উক্ত ঘটনায় নিহত ভিকটিম ইউসুফের স্ত্রী বাদী হয়ে লক্ষীপুর জেলার রামগতি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং-২৭/২০১৮ (ফৌজদারী কার্যবিধির ২৪৫ ও ২৫৮ ধারা)। মামলা রুজু হওয়ার পর আসামি ইব্রাহিক খলিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোগনে চলে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ প্রতিবদেন এবং সাক্ষিদের সাক্ষ্য প্রদানের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে আসামীর অনুপস্থিতিতে আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
৪। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামী ইব্রাহিম খলিল’কে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা কার্যক্রম আরম্ভ করে। একপর্যায়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বর্ণিত হত্যা মামলার আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামী চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানাধীন তকিরহাট এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুুক্তির সহায়তায় গত ০২ অক্টোবর ২০২৩ইং তারিখ র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এবং র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ এর যৌথ অভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামি ইব্রাহিম খলিল (৪৬), পিতা- আবুল কাশেম, সাং- চরলক্ষী, থানা- রামগতি, জেলা-লক্ষীপুর’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, সে বর্ণিত জোড়া খুন মামলায় আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে অতিরিক্ত ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী।
৫। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।