নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
সামান্য বৃষ্টিতেই পানিবন্দী হয়ে পড়ে জামালপুর সদর উপজেলার ৬নং নরুন্দি ইউনিয়নের পোস্ট অফিস ও যক্ষা নিরাময় কেন্দ্রটি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বর্তমান সরকারের আমলে সারাদেশের সর্বত্র উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও নরুন্দি ইউনিয়নটি দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নের ছোঁয়া বঞ্চিত। নরুন্দি ইউনিয়নে সরকারি ভবন গুলোর বেহাল দশায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এখানকার জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনগুলোর অধিকাংশেই ইতোমধ্যে দেখা দিয়েছে ফাটল। যে কোন সময় এসব ভবন ভেঙ্গে পড়ে ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা।
তন্মধ্যে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে খোদ নরুন্দি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, সাব পোস্ট অফিস ভবন, যক্ষা নিরাময় কেন্দ্র, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও নরুন্দি তদন্ত কেন্দ্রটি।
মঙ্গলবার (৭ জুন) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নরুন্দি পোস্ট অফিস ও যক্ষা নিরাময় কেন্দ্রটি বৃষ্টির পানিতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ সরকারি এ সেবাকেন্দ্রটির বেহাল দশায় জনমনে সরকারের প্রতি মারাত্মকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। স্থানীয়রা জানান, গত দুই তিন দিন ধরে পোস্ট অফিসটিতে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করায় সাধারণ মানুষ কোনপ্রকার সেবা নিতে পারছে না। এতে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
দায়িত্বরত পোস্ট মাস্টার সাথে কথা বলে জানা যায়, বিষয়টি তারা দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের নজরে আনলেও আজও কোন সুরাহা মিলেনি।
পোস্টমাস্টার আরো বলেন। পানিতে বসে অফিস করা না গেলেও বাধ্য হয়ে করছি।
এর পাশেই রয়েছে যক্ষা নিরাময় কেন্দ্র। এখানের ডাক্তারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারাও এই বিষয়টি বারংবার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। কিন্তু কোন প্রতিকার মিলেনি। বিশেষ করে ল্যাবের ভিতরে পানি ঢুকে পড়ায়। আমরা কোন কফ পরীক্ষা করতে পারছি না। এতে যেমন রোগীদের কষ্ট হচ্ছে। তেমনি আমরাও কষ্টে আছি, অফিসে বসতে পারছি না।
অপরদিকে অবহেলিত নরুন্দি ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তাই এখনও কাঁচা রয়ে গেছে। যে কারণে বৃষ্টির সময় এই রাস্তাগুলোতে ব্যাপক কাদার সৃষ্টি হয়। ফলে কোন প্রকার যানবাহন তো দূরের কথা সাধারন মানুষের চলাচলেও মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।
এদিকে ইউনিয়নবাসী জনসাধারণের প্রশ্ন হলো দেশব্যাপী সকল জেলা উপজেলা ইউনিয়ন পর্যায়ে এতো রাস্তা ঘাট পাকাকরণ হচ্ছে কিন্তু নরুন্দিতে হচ্ছে না কেন? তাহলে কি নরুন্দি অবহেলিতই থেকে যাবে।
নরুন্দির আশেপাশের সকল ইউনিয়নবাসী সাধারণ মানুষের প্রাণের দাবি ছিল, নরুন্দিকে থানা বা উপজেলা ঘোষণা করা হোক। এ বিষয়ে সকল সরকারি দলগুলোই নরুন্দিবাসীকে আশ্বাস দিয়ে এসেছে।
কিন্তু আদৌ কি নরুন্দি থানা বা উপজেলা হবে? এই প্রশ্ন সাধারন মানুষের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
অপরদিকে, নরুন্দির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদ। নদীর ওপারে বসবাস করে কয়েক লাখ মানুষ। যাদের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হলো নৌপথ। নৌকা দিয়ে সকল প্রকার মালামাল আনা নেওয়া করতে হয়। যেমনঃ কাঁচা সবজি, ধান, পাট, গম সকল প্রকার কৃষি পণ্য ; যা নরুন্দি বাজারে বিক্রি করে। একটি ব্রীজ হলে এ অঞ্চলের মানুষের কষ্ট লাগব হবে ওপারের মানুষজনের। এই নদীর উপর একটি ব্রিজ তৈরির জন্য সরকারি দলগুলো বারবার আশ্বাস দিয়ে গেছে। এই ব্রিজ টি হলে যেমন দুইপাড়ের মানুষের চলাচলের সুবিধা হতো তেমনি শেরপুর, নকলা, নালিতাবাড়ী হয়ে ভারত যাওয়ার এবং সকল প্রকার মালামাল আনা নেওয়ারও সুবিধা হতো। এতে করে দেশের এবং সকল মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নত হতো।