বিশেষ প্রতিনিধি (আনোয়ারা উপজেলা চট্টগ্রাম):
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও নির্বাচনের আগে দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যে কারনে আশানুরূপ ফল আসেনি দলটির।এ বছরেও ৭ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে।
ক্ষমতা থেকে দুরে থাকা অবস্থায় হামলা-মামলা নির্যাতনের শিকার হয়, তাছাড়াও সরকারবিরোধী বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আন্দোলনেও কাঙ্ক্ষিত সুফল না আসায় নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা ও চরম হতাশা ভর করে।
পরবর্তীতে নির্বাচনের ছয় মাসের মাথায় হঠাৎ করে শুরু হয় কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। প্রথম দিকে এই আন্দোলনের প্রতি কৌশলগত অবস্থান নিলেও পরে সর্বাত্মক সমর্থন জানায় দলটি। জাতীয়তাবাদী ূল বিএনপি, ছাত্রদলসহ দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাতে অংশগ্রহণও করে।
একপর্যায়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মূখে গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে গত ৫ আগস্ট।
পরবর্তীতে নোবেলজয়ী ড, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যা বিএনপির দীর্ঘ দিনের চাওয়া।
এদিকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার কারণে গত ১ লা সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে পারেনি ইউনিট। নেতৃত্বশূন্য দক্ষিণ জেলা বিএনপির হাল ধরতে ত্যাগীদের পাশাপাশি বাড়ছে সুবিধাবাদী নেতাদের আনাগোনা। বিএনপির ক্রাান্তিলগ্ন পেরিয়ে অপেক্ষা করছে সুসময়।
দুঃসময়ে আন্দোলন সংগ্রামে এমনকি দলীয় কর্মকান্ডে যাদের দেখা মেলেনি কমিটিতে আসতে তারাও মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সূত্রে জানা যায়, যে কোনো সময় ঘোষণা হতে পারে নতুন কমিটির।জেলা কমিটির নতুন নেতৃত্ব নিয়ে দলের তৃণমূলে চলছে নানা আলোচনা। নতুন কমিটিতে আসতে ধরনা দিচ্ছেন সিনিয়র নেতাদের কাছে। সম্ভাব্য কমিটিতে পদ পেতে দৌঁড়ছেন কয়েক ডজন নেতা।
পিছিয়ে নেই দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিমঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব এডভোকেট এম. লোকমান শাহ্।চট্টগ্রাম জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী তিনি। তিনি আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের উত্তর গুয়াপঞ্চক শাহ্ বাড়ির কৃতি সন্তান ও আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির সদস্য।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদকের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজেকে চট্টগ্রাম জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক বলে জানান ।
তিনি জানান, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে শুরু করে যারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, দলের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের ১৫ বছরের আত্মত্যাগ কিছু ব্যক্তির অপকর্মের জন্য প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে না। তাদের দায় দল কখনও নেবে না।
আনোয়ারা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম. লোকমান শাহ্ ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক, আইনজীবী নেতা ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিমঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন।
দলের দুঃসময়ের একজন ত্যাগী নেতা, রাজপথ থেকে দুইবার গ্রেপ্তারও হন পুলিশের হাতে। ২০১৩ সালের ১৮ মার্চ চট্টগ্রাম এবং ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার হন। দলের সক্রিয় এ নেতা বিএনপির দুঃসময়েও হাল ছাড়েননি মাঠের রাজনীতি থেকে। দলকে শক্তিশালী করতে সাধারণ জনগণকে নিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি সামাজিক কর্মকান্ডেও নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার” মুক্তিমঞ্চ”এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব এডভোকেট এম,লোকমান শাহ্,বলেন,তৃণমূল নেতারাকর্মীদের দাবী দলের দুঃসময়ে যারা দলের জন্য মাঠে ময়দানে ত্যাগ স্বীকার করে নানা আন্দোলন সংগ্রাম সক্রীয়। থেকেছেন,নিপীড়ন নির্যাতনে কারাভোগ করেছেন এবং রাজনৈতিক শক্তির পরীক্ষায় নিজের যোগ্যতার প্রমান করেছেন তাদেরকে দলের হাইকমান্ড যোগ্য বলে বিবেচিত করবেন এটাই আমার আশা। যুবদলের দায়িত্বে ছিলাম দক্ষিণ জেলার প্রতিটি এলাকায় এলাকায় ছাত্রদল যুবদল তথা জাতীয়তাবাদী দলকে শক্তিশালী করেছি যার ফলশ্রুতিতে ছাত্রদল, যুবদল, তথা বিএনপি এখনও সফলভাবে এগিয়ে চলছে,আমি দায়িত্ব পেলে কাজ করতে পারব এবং সংগঠনকে এগিয়ে নিতে পারব এটায় আমার বিশ্বাস এবং প্রতিশ্রুতি । এ বিষয়ে দক্ষিণ জেলা বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীদেরও বিশ্বাস দলের ত্যাগী এবং যোগ্যদের মুল্যায়ন করবেন এবং দলীয় মনোনয়ন দিবেন।তিনি আরও বলেন,আমি এক দিনের জন্যেও মাঠ ছাড়েনি, জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছি,তৃণমূল নেতা কর্মীদের পাশে থেকেছি আগামীতেও থাকব ইনশাআল্লাহ। দলের হাইকমান্ড যোগ্য মনে করে আমাকে দায়িত্বে রাখলে আমি দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের বাইরে কোনদিন যাবোনা ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দলের জন্য রাজপথে আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার সংগ্রাম চালিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।’