সাহিত্য পাতা :
গাঁও গ্রামের দস্যি মেয়ে গায়ের রঙটা কালো
তবু যে আমি বাবা মায়ের দুই নয়নের আলো।
ষোলতে বাবা দিলো বিয়ে ভালো ছেলে দেখে
এমনি কপাল! ভাগ্যে বিধাতা এসবও কি রাখে।
শশুড়বাড়ি মরার বাসা তিক্ত করলার ঝোল
বিনা দোষেই অপরাধী হই শুনতে হয় বোল।
কথায় কথায় লাগায় সবাই বাপের বাড়ির খোঁটা
কাটা ঘাঁতে দেয় যে আরো লবনের ওই ছিঁটা।
এদিক সেদিক হলে কাজে শোনায় শাশুড়ি কথা
কেউ বুঝলো না বুকের ভিতর কেমন বাজে ব্যাথা।
কতো কথা শুনায় সবাই নিরব হয়েই থাকি
কালো মেয়ের বাপ রেখেছে পণের টাকা বাকি।
আসলে বাবা কয় না কথা, মুখ করে সবাই কালা
কেমন করে সইবো আমি এমন কঠিন জ্বালা ।
জাতের মেয়ে কালো ভালো নদীর পানি ঘোলা
তবু কেন কালো মেয়ের বলো এতো জ্বালা।
এই সংসারে এসেছিলাম আমি যার হাতটি ধরে
সে অবহেলা করেছে শুধুই নেয়নি আপন করে।
সুখে দুঃখে থাকবো পাশে মনে ছিলো আশা
পশুর মতো ভোগ করেছে দেয়নি ভালোবাসা।
সজ্জাসঙ্গী করেছে শুধুই এমন পাষাণ স্বামী
কালো বলে ভালোবাসার পাইনি কোনো দামি।
প্রতি নিশি ঘুমহীন রই চোখের জলে ভাসি
সকাল হলেই মুখ বাড়িয়ে সবার সামনে হাসি।
কেউ বোঝেনি মনটা আমার পেয়েছি শুধুই ঘৃণা
কালো বলে ভালোবাসার স্বপ্ন দেখাই মানা।
তুসের আগুন জ্বলছে বুকে, ভিতর পুড়ে ছাঁই
কালো মেয়ের দুঃখের সীমা এই ধরাতে নাই।
স্বপ্ন ছাড়া একটি মানুষ কেমন করে বাঁচে
মৃত্যু ছাড়া তখন বলো কিই বা আর আছে।
ঝাপসা হয়ে আসছে দুচোখ আসছে আধাঁর নেমে
কত রাত ঘুমাইনি এখন ঘুমাবো চিরনিদ্রার ঘুমে।
জগত ছেড়ে যাচ্ছি আমি থেকো সবাই ভালো
আর কোনোদিন শুনবো না ছিলাম আমি কালো।