তামিম আহাম্মেদ :
জনপ্রতিনিধি হয়ে জনসেবা করতে চান ভোলার লালমোহন উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা আসনের নারী সদস্য প্রার্থী নাসিদা বেগম। তিনি জনপ্রতিনিধি হয়ে গরিব-দুঃখী মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে চান। এ জন্যই তিনি ইউপি নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনে নারী সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন। বিজয়ী হলে এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে চান নাসিদা বেগম।
এলাকাবাসী জানায়, নাসিদা বেগম পেশায় একজন ভিক্ষুক হলেও দ্বিতীয়বারের মত আসন্ন বদরপুর ইউনিয়ন থেকে ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন। বদরপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী হিসেবে তালগাছ প্রতীকে গণসংযোগ, উঠান বৈঠক আর প্রচার-প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি। নির্বাচনী এলাকার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। ভোট চাইছেন ‘তালগাছ’ প্রতীকে।
জনগণের কাছ থেকে সাড়াও পাচ্ছেন নাসিদা। এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকা যেন ভোট উৎসবে পরিণত হয়েছে। সর্বত্র বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। কিন্তু প্রার্থী নাসিদা বেগমকে ভিন্ন চোখে দেখছেন কেউ কেউ। একজন ভিক্ষুক হয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় পুরো এলাকায় যেন তাকে নিয়েই আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। তবে সাধারণ ভোটারদের অনেকেই মনে করছেন জয়ী হতে পারবেন নাসিদা। বদরপুর ইউনিয়নে সংরক্ষিত ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নাসিদার সঙ্গে লড়ছেন আরও ৬ প্রার্থী।
ভোটার মান্নান, খোরশেদ ও শাজাহান জানান, গরিবদের সেবা করতে প্রার্থী হয়েছেন নাসিদা। ভোটারদের কাছ থেকে তিনি সাড়াও পাচ্ছেন। এলাকার অনেকেই তাকে সহযোগিতা করছেন।
সদস্য প্রার্থী নাসিদা বেগম বলেন, ভোট শেষ হলেই প্রার্থীরা জনগণকে ভুলে যান, তাদের আর খোঁজ খবর নেন না, তাই আমি ক্ষোভের সঙ্গেই প্রার্থী হয়েছি। জয়লাভ করতে পারলে গরিব মানুষের সেবা করবো। এলাকার উন্নয়ন করবো। ভোট যাতে সুষ্ঠু হয় সে দাবি জানাই।
বদরপুর ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নাসিদা বেগমের স্বামী দিনমজুর ফজলু খাঁ। তিনিও একবার প্রার্থী হয়েছিলেন, তবে জয়ী হতে পারেননি। ১০ বছর আগে ফজলু খাঁ মারা যান। তাদের ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। ছেলেরা দিনমজুরের কাজ করেন আর মেয়েরা ঢাকায় থাকেন। সেখানে অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে।
নাসিদা তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন। তার নিজের ৮ শতাংশ জমি এবং প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের একটি ঘর রয়েছে। যেখানে এক ছেলেকে নিয়ে থাকেন নাসিদা।
এ ব্যাপারে রির্টানিং অফিসার আমির খসরু গাজী বলেন, অন্য প্রার্থীদের মত ভিক্ষুক নাসিদাও প্রচারণা চালাচ্ছেন। সব প্রার্থীকেই আমরা সমানভাবে দেখছি। নির্বাচন নিয়ে কারো কোনো অভিযোগ নেই।
এদিকে বদরপুর ইউনিয়নে তিনটি ওয়ার্ডের সংরক্ষিত ১, ২ ও ৩ নম্বর আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ৫৬৬ জন। এখানে নাসিদার সঙ্গে লড়ছেন আরও ৬ প্রার্থী। ভোটের লাড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত কী জয়ী হতে পারবেন নাসিদা সে প্রশ্নের উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন পর্যন্ত।