মানব সময় ডেস্ক নিউজ :
সাম্প্রতিককালে চট্টগ্রাম মহানগরীর সবচেয়ে বড় অবৈধ ভিওআইপি (VOIP) ব্যবসার বিপুল পরিমাণ সরঞ্জমাদিসহ প্রায় ৩,০০০ সীম উদ্ধারপূর্বক মূলহোতাকে আটক করেছে র্যাব-০৭ চট্টগ্রাম।
১। র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস্য উদঘাটন,অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। র্যাব-৭ চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, মাদক উদ্ধার, ছিনতাইকারী, অপহরনকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারন জনগনের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা কোনোভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, মেসেঞ্জার ইত্যাদি ওটিটির মতো উন্নত প্রযুক্তি এখন দেশে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হলেও কমেনি ভিওআইপির মাধ্যমে সাধারণ ফোনে কল আদান-প্রদান। ফলে বিদেশ থেকে টেলিফোন কল আসা ও যাওয়ার পরিমাণ বাড়লেও কাঙ্খিত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশ। বিভিন্ন পত্রপত্রিকার রিপোর্টে দেশে বর্তমানে বৈধ পথে আন্তর্জাতিক কল আসছে প্রতিদিন আনুমানিক প্রায় দুই কোটি মিনিট। এর মধ্যে ৬০ লাখ থেকে ৭০ লাখ মিনিট কল আসছে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম প্রতিষ্ঠান বিটিসিএলের ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডাবিøউ) দিয়ে, আর বাকিটা আসছে বেসরকারি আইজিডাবিøউ অপারেটর ফোরাম (আইওএফ)-এর মাধ্যমে। অন্যদিকে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন কোটি মিনিট কল এখনো ভিওআইপির অবৈধ কারবারিদের মাধ্যমেই আসছে।
৩। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন মোহাম্মদপুর থাই ফুড এর বিপরীতে ১০ম তলা ইসমাম টাওয়ারের ৫ম তলার দক্ষিন দিকের ফ্ল্যাটে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি সরকারী কর (রাজস্ব) ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে ভিওআইপি ব্যাবসা করে ও ভিওআইপি সরঞ্জমাদি হেফাজতে রেখেছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে ০৭ মার্চ ২০২২ইং তারিখ ১৮১৫ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল এবং বিটিআরসির কর্মকর্তাসহ উক্ত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ নাছির উদ্দিন (৪৩), পিতা- আব্দুল মোনাফ, সাং- বড় হাতিয়া, পোঃ-ভবানীপুর, থানা- লোহাগাড়া, জেলা- চট্টগ্রাম,এ/পি-ইসমাম টাওয়ার মোহাম্মদপুর পাঁচলাইশ চট্টগ্রামকে আটক করে। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞসাবাদে আসামীর দেখানো ও শনাক্ত মতে তার হেফাজত থাকা অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার কাজে ব্যবহৃত ১। ০৬ টি অত্যাধুনিক ভিওআইপি ব্যবসার এন্টিনা যুক্ত মেশিন ২। ২৮৩০ টি টেলিটক সীম ৩। ১৬৫ টি এয়ারটেল সীম, ৪। ০১ টি ল্যাপটপ, ৫। ০৪টি মোবাইল, ৬। ০৬টি পাওয়ার সাপ্লাই, ৭। ০৩টি মাল্টিপ্লাগ, ৮। ০৬টি চার্জার, ৯। ০২টি মডেম, ১০। ২৩টি ক্যাবল, ১১। ০৩টি রাউটার, ১২। ০৫টি আইপি, ১৩। ০১টি এয়ারকুলার, ১৪। ০২টি মাউস, ১৫। ১৬০ টি খোলা এন্টিনা, ১৬। ২৫০টি সিমের খালি প্যাকেট, ১৭। ০১টি নোস প্লাস, ১৮। ০২টি স্ক্রু ডাইভার এবং ১৯। ০১টি টেপকাটার উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত অবৈধ ভিওআইপির আনুমানিক মূল্য ৮২ লক্ষ টাকা।
৪। গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, সে ২০১৬ সাল থেকে লাইসেন্স বিহীন অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করে রাষ্ট্রের কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে।
৫। উল্লেখ্য যে, সিডিএমএস পর্যালোচনা করে গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম জেলার পাঁচলাইশ থানায় ০২টি সরকারী কর (রাজস্ব) ফাঁকি দিয়ে অবৈধ ভাবে ভিওআইপির ব্যবসার মামলা রয়েছে। এছাড়াও ধৃতআসামী অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসার জন্য র্যাব কর্তৃক পূর্বে একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছিল।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত আলামত সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।