ডেস্ক নিউজ :
১০ বছরের এক শিশু উদ্ধারসহ ০৩ জন অপহরণকারীকে আটক করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
১। র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদ্ঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, মাদক উদ্ধার, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। গত ০২ ফেব্রæয়ারি ২০২২ ইং তারিখ মোঃ জসিম উদ্দিন (৪৭), পিতা- মৃত শফিকুর রহমান, সাং- মধ্যম ধলিয়া থানা ও জেলা- ফেনী র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এ অভিযোগ করেন যে, তার ছেলে ভিকটিম মাহমুদুল হাসান (১০) ফেনী লালপুল বালুয়া চৌমুহনী মাদ্রাসার হেফজ বিভাগে অধ্যয়নরত ছাত্র। গত ০৮ জানুয়ারি ২০২২ ইং সকাল অনুমান ১০০০ ঘটিকার সময় বাসার কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে বেড়িয়ে যায়। সন্ধ্যা পর্যন্ত বাসায় ফিরে না আসালে তার মাদ্রাসা এবং তাদের আত্মীয়-স্বজনসহ সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুজি করে তার কোন সন্ধান না পাওয়ায় ফেনী মডেল থানায় নিখোজ সংক্রান্তে একটি সাধারন ডাইরী করি যাহার নং- ৬১৯ তাং- ১১/০১/২২ ইং।
৩। এমতাবস্থায় খোঁজাখুজি করাকালীন সময়ে গত ২৯ জানুয়ারি ২০২২ ইং তারিখে একটি মোবাইল নম্বর হতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার এ ফোন করে বলে যে তার ছেলে মাহমুদুল হাসান (১০) তাদের হেফাজতে আছে যদি তার ছেলেকে নিতে চায় তাহলে ৬,০০০ টাকা বিকাশ করে পাঠাতে। বিকাশে টাকা পাঠাইলে তার ছেলেকে অপহরণকারীরা ফেরৎ দিব। এই কথা কেউ যদি জানে তাহলে ভিকটিমকে হত্যা করা হবে। এই কথা শুনে সে ভয়ে কাউকে না জানিয়ে তাৎক্ষনিকভাবে ২,০০০ টাকা পাঠিয়ে দেয়। টাকা পাঠানোর কিছুক্ষন পর হতে উক্ত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পুনরায় গত ৩১ জানুয়ারি ২২ ইং তারিখে একই নাম্বার হতে ভিকটিম এর পিতার মোবাইলে ফোন করে জানান যে, এই মূহুর্তে বাকী টাকা পাঠাইলে তার ছেলেকে ফেরৎ দিব অন্যথায় তার ছেলের লাশ ও খুঁজে পাবেন না। পুনরায় তাৎক্ষনিকভাবে ৩,৫০০ টাকা পাঠিয়ে দেয়। টাকা পাঠানোার কিছুক্ষন পর উক্ত নাম্বারটি বন্ধ দেখায়। উল্লেখ্য যে, ০২ ফেব্রæয়ারি ২২ ইং তারিখে বিভিন্ন সময়ে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিগন ফোন করে জানায় যে এক ঘন্টার ভিতরে অপহরণকারীদের ৫০,০০০ টাকা যদি না দেন তাহলে তার ছেলেকে খুন করা হবে নতুবা ইন্ডিয়া পাচার করে দেওয়া হবে।
৪। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অপহরণকারীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি চালায়। গোয়েন্দা নজরদারির এক পর্যায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, অপহরণকারী চক্র ফেনী জেলার ফেনী মডেল থানাধীন ১৬ নং ওয়ার্ডের জহুর হোসেন চৌধুরী সড়ক এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ০২ ফেব্রæয়ারি ২০২২ ইং তারিখ ২০২০ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১। মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন @ জাহিদ (২৬), পিতা- মফিজুল হক, সাং- রামপুর, থানা- পশুরহাট, জেলা- নোয়াখালী, ২। তানভির আহম্মেদ ইমন (২৪), পিতা- শহিদুল্লাহ, সাং- উত্তর শ্রীধরপুর, থানা- দাগনভূঁইয়া, জেলা- ফেনী এবং ৩। সজিবুল ইসলাম (৩০), পিতা- মৃত হাবিবুর রহমান, সাং- উত্তর পশ্চিম চরনাবাদ, থানা ও জেলা- ভোলাদের আটক করে এবং ভিকটিম মাহমুদুল হাসান (১০) পিতা- মোঃ জসিম উদ্দিন (৪৭), সাং- মধ্যম ধলিয়া থানা ও জেলা- ফেনীকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞিসাবাদে উক্ত অপহরনের কথা স্বীকার করে।
৫। গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত ভিকটিম সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের নিমিত্তে ফেনী জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।