সিটি প্রতিনিধি চট্টগ্রাম :
মোহাম্মদ ইসমাইল, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সাংবাদিকদের ভূমিকা, তিনটি জাতীয় নির্বাচন, আইসিটির রায়, শাপলা চত্বর ট্র্যাজেডি এবং মাওলানা সাঈদীর মামলার পরবর্তী ঘটনাবলির সাংবাদিকিক মূল্যায়ন নিয়ে জাতিসংঘের সহযোগিতা চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শুক্রবার (২ মে) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে ‘জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশ: গণমাধ্যমের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের কাছে অনুরোধ জানানো হবে তারা যেন একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল গঠন করে বাংলাদেশের গণমাধ্যম গত দেড় দশকে কী ভূমিকা রেখেছে তা বিশ্লেষণ করে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
শফিকুল আলম বলেন, “আমরা চাই একটি নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ হোক—সাংবাদিকরা কোথায় সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়েছে আর কোথায় নীরব থেকেছে বা পক্ষ নিয়েছে। বিশেষ করে আন্দোলনরত ছাত্রদের পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া, গুজব ছড়ানো কিংবা একপেশে সংবাদ পরিবেশনের অভিযোগ তদন্ত হওয়া জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা কলম ভেঙে দেইনি, প্রেসে তালা দেইনি। বরং আজ মানুষ সবচেয়ে বেশি মত প্রকাশের স্বাধীনতা পাচ্ছে। এই মুহূর্তে দেশের গণমাধ্যমকে পোস্ট-রেভ্যুলুশনারী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার প্রস্তুতি নিতে হবে। বিদেশি মিডিয়া এবং আওয়ামীপন্থী মিডিয়া ভিডিও এবং অপতথ্যের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।”
সভায় ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণীত হয়েছিল সুরক্ষার জন্য, কিন্তু তা ব্যবহার করা হয়েছে সাংবাদিকদের দমন করতে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেই আইন বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে।”চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে সভায় প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন ও মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী।
সভায় সাংবাদিকদের সুরক্ষায় পৃথক আইন প্রণয়ন, ফ্যাক্ট চেকিং সেল গঠন, এবং স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা চর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। বিএফইউজের নেতারা বলেন, সংবাদপত্রকে দলীয় প্রচারমাধ্যম বানানো যাবে না, আংশিক সত্য দিয়ে সাংবাদিকতা হয় না।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের বিশিষ্ট সাংবাদিক, শিক্ষক, আইনজীবী ও পেশাজীবী নেতারা। সব বক্তাই সাংবাদিকতার মান উন্নয়ন, স্বাধীনতা রক্ষা ও দায়িত্বশীল ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।