জেএসসি পরীক্ষায় গণিতের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পরীক্ষা শুরুর আগে কেন্দ্রের সামনে শিক্ষার্থীদের মোবাইলে প্রশ্নপত্র পাওয়া গেছে। ফেসবুকের মাধ্যমে এ প্রশ্ন পরীক্ষার্থীরা পায় বলে অভিযোগ। তাই প্রশ্ন না পাওয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া গণিতের প্রশ্নপত্রেও ভুল ধরা পড়েছে।
জানা গেছে, বীজগণিত, ত্রিকোণমিতি ইত্যাদি চারটি অংশ আলাদাভাবে ‘ক’ ‘খ’ ‘গ’ এবং ‘ঘ’ অংশ থাকে প্রশ্নে। কিন্তু ‘ঘ’ অংশ ছিল না। এর পরিবর্তে দুটি অংশই ‘গ’ হিসেবে ছিল। এ কারণে অনেকেই প্রশ্নের উত্তর লিখতে বিভ্রান্ত হয়। এর ফলে কেউ প্রথম ‘গ’ থেকেই দুটি প্রশ্নের উত্তর লেখে। আবার কেউ উভয় ‘গ’ থেকে আলাদা দুটি উত্তর লিখেছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ আমাদের কাছেও এসেছে। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্নপত্রের ওপর আমাদের কোনো আর নিয়ন্ত্রণ থাকে না। পরীক্ষা নিতে তা আমরা শিক্ষকদের কাছে দেই। এরপর প্রশ্নফাঁস হলে আমাদের হতাশ ও ক্ষুব্ধই হওয়া ছাড়া কিছু করার থাকে না।’
তিনি বলেন, ‘তবে আমরা এ ধরনের অপকর্মে জড়িত সন্দেহে কিছু লিঙ্ক (ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান) পেয়েছি। গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিটিআরসিকে (বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন) তথ্য দিয়েছি। আশা করি, আগের মতোই দুষ্কৃতকারীরা ধরা পড়বে।’
গণিত প্রশ্নপত্র ভুলের ব্যাপারে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, মুদ্রণজনিত কারণে ‘ঘ’ এর স্থলে ‘গ’ এসেছে। তবে এ জন্য শিক্ষার্থীরা কোনো ক্ষতির শিকার হবে না। যে যেখান থেকেই দুটি প্রশ্নের উত্তর দিক নম্বর পাবে। সেভাবে নির্দেশনা দেয়া হবে।
এবারের জেএসসি পরীক্ষায় দু-একটি বিষয় শেষ হওয়ার পরই প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠতে থাকে। প্রশ্নফাঁসের ক্ষেত্রে এবার সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসছে মিরপুর এলাকা থেকে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এবং ডেমরা এলাকার দু-একটি ব্যবসায়িক স্কুলের ব্যাপারেও অভিযোগ কমবেশি আসছে।
রোববার জেএসসিতে ছিল গণিত বিষয়ের পরীক্ষা। জেডিসিতে ছিল কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা এবং শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা।
রাজধানীর মিরপুরের আদর্শ স্কুলে আসন পড়েছে মণিপুর স্কুলের শিক্ষার্থীদের। ওই কেন্দ্রের একজন পরীক্ষার্থীর বাবা গোলাম মোস্তফা টেলিফোনে বলেন, ‘পরীক্ষা শেষে আমার মেয়ে কান্না শুরু করেছে। তার কান্না থামানো যাচ্ছে না। সকালে স্কুল গেটে গিয়ে সে দেখে, তার বান্ধবীরা মোবাইল ফোনে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেখছে। কাছে গিয়ে একনজরে প্রশ্নপত্র দেখে নেয় সে। পরীক্ষার হলে গিয়ে দেখে, প্রশ্নগুলো ক্রমিক নম্বরও পর্যন্ত মিলে গেছে। পরীক্ষা শেষে বেরিয়ে এটা আমাকে জানায়। এরপর থেকে তার মন খারাপ।’
গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমার মেয়ের প্রশ্ন- তাহলে লেখাপড়া করে তার কী লাভ হলো? আমি এ প্রশ্নের জবাব দিতে পারিনি। আপনার মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রশ্নটি রাখলাম।’
উল্লেখ্য, এ বছর এখন পর্যন্ত অন্তত পাঁচটি বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। আজকের পরীক্ষায় সারাদেশে একজন শিক্ষকসহ ৬৩ জন বহিষ্কার হয়েছে। আজ সারাদেশে ৪২ হাজার সাতজন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
Editor : Md.Moslauddin (Bahar) Cell: 01919802081 Dhaka Office :: Manni Tower, Road 09,House : 1258 Mirpur Dhaka. Cell:01747430235 email : manobsomoynews@gmail.com Chattogram office :: Lusai Bhaban,( 2nd Floor) Cheragi Pahar Circle, Chattogram. Cell: 01919802081
© All rights reserved manobsomoy