মানব সময় ডেস্ক :
র্যাব, সেনাবাহিনী, ডিবি পুলিশ কর্মকর্তা, ইঞ্জিনিয়ার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা, লেকচারার, এসআলম গ্রুপের শীর্ষ কর্মকর্তা ইত্যাদি পরিচয় ব্যবহার করে দেন হুমকি এবং সাথে আছে মাদক ব্যবসা। এমনই এক ভুয়া র্যাব পরিচয়দানকারী প্রতারক ও মাদক ব্যবসায়ী র্যাব-৭, চট্টগ্রামের কর্তৃক গ্রেফতার।
১। বাংলাদেশ আমার অহংকার এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। আটককৃত আসামী রিয়াদ বিন সেলিম এর প্রধান কাজই ছিলো সরকারি কর্মকর্তা অথবা শীর্ষ কোন কোম্পানীর কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পরিচয়ে প্রতারনা করা। তিনি পেশায় মূলত একজন গাড়ি চালক। প্রতারক রিয়াদ ডিবি-পুলিশে কর্মরত একজন কর্মকর্তার ব্যক্তিগত গাড়ির চালক হিসেবে চাকুরী করার সময় বিভিন্ন ব্যক্তির কাজ করে দেওয়ার উদ্দেশে অর্থগ্রহন শুরু করেন এবং একপর্যায়ে এটিকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন। তার চাকুরীদাতার সুবাধে বিভিন্ন থানা/ সংস্থায় গমন করায় তার জন্য প্রতারনামূলক কথা বলা ও প্রভাব দেখানো সহজ হয়ে যায়। অতঃপর তিনি প্রথমিকভাবে ডিবি অফিসার পরিচয়ে প্রতারনা শুরু করেন। জীবনে সেনাবাহিনীতে যোগদানের শখ ছিল তার। সেই শখ পূরনের আশায় ২০১৯ সালে তিনি সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন পদবীর ভুয়া ১টি পরিচয়পত্র প্রস্তুত করে এবং সেই পরিচয়পত্র দিয়ে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোরের আওতাধীন বিভিন্ন ঠিকাদার এর নিকট হতে আর্থিক সুবিধা লাভের চেষ্টা করে। একইসাথে তিনি কখনো ইঞ্জিনিয়ার, কখনো ইষ্ট-ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয় (চট্টগ্রাম) এর লেকচারার, কখনো তিনি বনে যান এস আলম গ্রæপের শীর্ষ কর্মকর্তা আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সেজে বিভিন্ন লোকাল সাংবাদিকদের মন্ত্রনালয়ে প্রবেশের সুবিধা দেওয়ার কথা বলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করেন।
৩। এইসকল পরিচয় একাধিকবার ব্যবহার করে ফেলায় সবশেষে তার শখ জাগে র্যাবের কর্মকর্তা হওয়ার। এই উদ্দেশ্যে সে তার মোবাইল নাম্বারের সাথে র্যাব ফোর্সেস এর মনোগ্রাম যুক্ত করে এবং ০১৭৭৭ (র্যাব এর সরকারি নাম্বারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ), এই সিরিজের একটি মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে যেন হঠাৎ করে দেখলে র্যাব এর সরকারী মোবাইল নাম্বার মনে হয়। নিজেই হোয়াটসঅ্যাপ ও কন্টাক্টে AD Operations, RAB H/Q লিখে তা সেইভ করেন। পরবর্তীতে উক্ত নাম্বার ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ওয়ারেন্ট ও মামলার কথা বলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করেন। সর্বশেষ তিনি চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক ও জনপ্রতিনিধি ব্যক্তিবর্গকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেঞ্জারে চট্টগ্রামের র্যাব কর্মকর্তার পরিচয়ে প্রতারনার চেষ্টা করে।
৪। সর্বশেষ তিনি ভুক্তভোগী জনাব আবু সুফিয়ানকে হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদেবার্তা প্রেরন করে মামলা ও গ্রেফতারি পরোয়ানার হুমকি প্রদান করলে তিনি র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম র্যাব ফোর্সেস এর ভাবমূর্তির বিষয়টি বিবেচনা করে অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়ে উক্ত প্রতারককে আটকের জন্য ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে। এরই প্রেক্ষিতে গোপন সংবাদের মাধ্যমে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, উক্ত প্রতারক চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানাধীন হাজীর পোলস্থ এলাকার একটি বসতবাড়ীর ২য় তলা বিল্ডিং এ অবস্থান করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে গত ১০ মার্চ ২০২৩ খ্রি. তারিখ আনুমানিক ০০৩০ ঘটিকায় র্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ রিয়াদ বীন সেলিম (২৪), পিতা- মোঃ সেলিম উদ্দীন, সাং- পাইকপাড়া, পটিয়া পৌরসভা, চট্টগ্রাম এ/পি- হাজীরপোল, ০৪নং ওয়ার্ড, থানা- চান্দগাঁও, চট্টগ্রাম মহানগর’কে প্রতারনার কাজে ব্যবহিত বিভিন্ন প্রকার আলমতসহ গ্রেফতার করেত সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সামনে তার ব্যবহার্য জিনিসপত্র পরীক্ষা করলে সেনাবাহিনীর ক্যামোফ্লাজ রঙ এর একটি ব্যাগের মধ্যে থেকে ইয়াবা ট্যাবলেটও উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও অন্যান্য ব্যাগ হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত নকল পরিচয়পত্রসহ অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয়।
৫। এছাড়াও তার আচরন ও মোবাইল পরীক্ষা করে দেখা যায় তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে র্যাব কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে পন্য অর্ডার করেন এবং বিনামুল্যে পাওয়ার চেষ্টা করেন। সে বিবাহিত ও সন্তানের জনক হওয়া স্বত্তে¡ও ১ম স্ত্রীর অগোচরে ২য় বিয়ে করেন। তিনি চারিত্রিকভাবে অস্থিতিশীল। তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার থানায় নারী-নির্যাতনের মামলা রয়েছে।
৬। গ্রেফতারকৃত আসামীর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
Editor : Md.Moslauddin (Bahar) Cell: 01919802081 Dhaka Office :: Manni Tower, Road 09,House : 1258 Mirpur Dhaka. Cell:01747430235 email : manobsomoynews@gmail.com Chattogram office :: Lusai Bhaban,( 2nd Floor) Cheragi Pahar Circle, Chattogram. Cell: 01919802081
© All rights reserved manobsomoy