ডেস্ক নিউজঃ
না ফেরার দেশে চলে গেলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নিউরোসার্জন ও চট্টগ্রামের নিউরো সার্জারির অগ্রদূত অধ্যাপক ডা. এল এ কাদেরী। গতকাল রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর বেসরকারি সিএসসিআর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক বিভাগীয় প্রধান এ চিকিৎসকের। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি দেশের দ্বিতীয় নিউরো সার্জনও।
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএম) চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক খান মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রখ্যাত চিকিৎসক এল এ কাদেরী দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন। ঢাকায় টাকনা চিকিৎসা শেষে গত সপ্তাহে চট্টগ্রামের সিএসসিআর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এরমধ্যে রবিবার সাড়ে ১১টার দিকে আইসিইউতে শেষ নিঃশ^াস ত্যাগ করেন তিনি।’
বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী বলেন, রবিবার বাদ আছর প্রিয় প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ৩০ আগস্ট সোমবার বেলা ১১টায় জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে দ্বিতীয় জানাজা এবং গ্রামের বাড়ি হাটহাজারীতে বাদ জোহর তৃতীয় জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
১৯৪১ সালের ১ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন প্রখ্যাত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এল এ কাদেরী। চট্টগ্রাম শহরেই তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয়। ১৯৫৭ সালে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে কৃতিত্বের সাথে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯৫৯ সালে কৃতিত্বের সাথে আইএসসি পাশ করার পর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস এ ভর্তি হন। ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত এমবিবিএস ফাইনাল পরীক্ষায় সারাদেশের মধ্যে স্বর্ণপদকসহ প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তা সত্ত্বেও সরকার বিরোধী ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণে আইয়ুব-মোনায়েম সরকার তাঁকে স্কলারশিপ থেকে বঞ্চিত করেন এবং উচ্চ শিক্ষাতে বিদেশ যাওয়া বন্ধ করে দেয় ৪ বছরের জন্য। এরপর ১৯৬৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৬৮ সালের ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাউস সার্জন, সিনিয়র হাউস সার্জন ও ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৬৮ সালে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উচ্চতর শিক্ষার জন্য ডা. এল এ কাদেরী লন্ডনে যান। সেখানে মেধার স্বাক্ষর রাখেন। ১৯৭৮ সালে তাঁর প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নিউরোসার্জারি বিভাগ খোলা হয়। তিনি অবসরে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি ইউএসটিসি’র প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করেন।
এদিকে, চট্টগ্রামের খ্যাতিমান এ চিকিৎসকের মৃত্যুতে চিকিৎসক সমাজে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী ব্যরিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, সাবেক মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো ইসমাইল খান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার, বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান, সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী, বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. একিউএম সিরাজুল ইসলাম, ডা. খুরশীদ জামিল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হার্ট বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিনিয়র্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী।
এছাড়া চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলহাজ আলী আব্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান প্রমুখ।
Editor : Md.Moslauddin (Bahar) Cell: 01919802081 Dhaka Office :: Manni Tower, Road 09,House : 1258 Mirpur Dhaka. Cell:01747430235 email : manobsomoynews@gmail.com Chattogram office :: Lusai Bhaban,( 2nd Floor) Cheragi Pahar Circle, Chattogram. Cell: 01919802081
© All rights reserved manobsomoy